আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে স্বরূপকাঠিতে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয় ২৩ মে রবিবার।উপজেলা মিলনায়তনে দুপুরের পর বক্তব্য দিতে গিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন উম্মাহ প্রকাশ করেন, স্বরূপকাঠির নেতা কর্মীদের উপর।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এসময় বলেন সভাস্থলে প্রবেশের মুখে বিভিন্ন ভাইয়ের নামে শ্লোগান শুনতে পেলাম। কিন্ত একবারও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নামে শ্লোগান শুনিনি। তিনি খোভ প্রকাশ করে বলেন এর নাম আওয়ামীলীগ নয়।আওয়ামীলীগের শ্লোগানে বঙ্গবন্ধু এবং দলীয় সভানেত্রীর নামে শ্লোগান তারাই দেয়না যারা নেত্রীর সিদ্ধান্তকে অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থীকে উসকে দেয় বা তাকে সহযোগিতা করে।তাদের অনুসারিরাই আজকে বঙ্গবন্ধুর নামে শেখ হাসিনার নামে শ্লোগান দেয়নি।আওয়ামীলীগে থেকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে পাশ কাঠিয়ে ব্যাক্তির নামে শ্লোগান দেয়া এ নীতি থেকে বের হতে হবে স্বরূপকাঠি আওয়ামীলীগকে।
প্রধান অতিথি বলেন যে পরিবারে কোনোদিন বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারন হয়নি, সে পরিবার থেকে আওয়ামীলীগে এসে অনেক ধন সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। কিন্ত দুর্দিনের ত্যাগী নেতারা এখনও বঙ্গবন্ধুকে ও দলকে ভালোবেসে আকড়ে আছে। এসব ত্যাগী নেতা কর্মীদের মুল্যায়ন করতে হবে।আর সুবিধাবাদীদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি আরো যোগ করেন, আওয়ামীলীগের গঠন তন্ত্র অনুসারে সংঘঠনকে সমৃদ্ধ করার জন্য মিছিল মিটিং সমাবেশ এবং গনতান্ত্রিক পন্থায় কমিটি গঠন যা সংগঠনের ভিত্তি।তা ব্যহত হয়েছে স্বরূপকাঠিতে।আউয়াল ভাইয়ের শ্রম মেধা ও নিষ্টার নেতৃত্বে পিরোজপুর আওয়ামীলীগ সুসংগঠিত হলেও আওয়ামীলীগের পিরোজপুর জেলা বর্ধিত সভায় এ উপজেলার কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত হয়নি।
বার বার জেলা নেতৃবৃন্দ এমনকি আমিও এখানকার নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্ত এখানে সন্মেলন করাতে সক্ষম হইনি।২৫ বছর একটি উপজেলায় সন্মেলন হয়না , কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এমন প্রশ্নের আমি জবাব দিতে ব্যার্থ হই ।অনেক চরাই উৎরাইয়ের পর আজকে যে কমিটি দেখলাম সে কমিটির কাগজে উপজেলা প্রেসিডেন্ট,সেক্রেটারীর কোনো স্বাক্ষর নেই ।আবার খোজ নিয়ে জানলাম এ কমিটির ১৩/১৪ জন মারা গিয়াছে, অনেকে অসুস্থ্য রয়েছেন। একটা জোড়াতালি দিয়ে আওয়ামীলীগ পরিচালিত হচ্ছে স্বরূপকাঠিতে। তিনি বলেন বিগত বছরগুলোতে সন্মেলন হলে নতুন কমিটি হতো।নতুন নেতৃত্ব আসতো আওয়ামীলীগের প্রসার ঘটতো স্বরূপকাঠিতে।
এসময় তিনি খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলে বলেন। আজকের এই অনলাইনে টাকা খরচ করে সকলকে যুক্ত হতে হচ্ছে। কিন্ত ১৯৯২ সনে বিনা পয়সায় সাবমেরিন কেবলের সংযোগ পেয়েও খালেদা জিয়া তা গ্রহন করেননি। বরং পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বলেছিলো যদি আমরা সাব মেরিন কেবলের সাথে যুক্ত হই তাহলে দেশের সব তথ্য বিদেশীরা নিয়ে যাবে। উনি তখন নির্বোধের মতো এটা গ্রহনে অসম্মতি না জানালে আমাদেরকে সাবমেরিন কেবলে টাকা খরচ করে যুক্ত হতে হতোনা।
এসময় তিনি বলেন বাংলাদেশ শ্রীলংকা হয়ে যাবে এ স্বপ্ন বিএনপি জামায়াত দেখাতে পারে কিন্ত শেখ হাসিনা এ চিন্তা করেন না। শেখ হাসিনা জিবিত থাকতে বাংলাদেশে একটা মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরন করবে না।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি একে এম এ আউয়াল বলেন ব্যালটের মাধ্যমে কমিটি হবে এ উপজেলায়।দলকে কর্মীমুখি করেন ১৮ তারিখে সন্মেলন হবেই। যদি কেহ না থাকে আমি যাদেরকে চিনি তাদেরকে নিয়ে দু মিনিটে কমিটি করবো ইনশাআল্লাহ।বক্তব্যের মাঝে পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য একে এম এ আউয়াল বলেন আমি যদি নৌকা না পাই তাহলে আপনিও পাবেন না এটা চ্যালেঞ্জ করলাম। তবে একথা তিনি কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন তার নাম পাওয়া যায়নি।
এদিকে সকাল ১১ টা বা তার কিছু পরে পিরোজপুর থেকে আগত নেতাকর্মীদের সাথে থাকা বিপথগামী কিছু কর্মী জাহিদিয়া মাদ্রাসার সামনে থাকা সেচ্ছা সেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাজ্জাদ সাকিব বাদশা ও একেএম আজিম এর ছবি ও ব্যনার ছিরে ফেলে।ওই ছেলেরাই আবার উপজেলা গেটের পশ্চিম প্রান্তে থাকা মৎস ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী শম রেজাউল করিমের ছবি টেনে নিয়ে লাথি মারে বলে জানান উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারী বর্তমান যুবলীগ কর্মী একে এম শহিদুল ইসলাম রিপন। তিনি মুঠোফোনে বলেন এসময় স্বরূপকাঠি ছাত্রলীগের শাহাবুদ্দিন, সজিবসহ কয়েকজন প্রতিবাদ করে।পিরোজপুর থেকে আগত ওই বখাটেরা প্রতিবাদকারিদের আক্রমন করে আহত করে। আমি উত্তেজনা থামাতে গেলে আহত হই। আমার কানের নিচে তিনটা শেলাই দিতে হয়।এছারা স্বরূপকাঠি ছাত্রলীগের শাহাবুদ্দিন সজিব উজ্জল শিমুল সাদ্দাম সহ ৭/৮ জন আহত হন। এদেরকে স্বরূপকাঠি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে এ ব্যাপারে স্বরূপকাঠি থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানান রিপন।
বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরূপকাঠি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ।সাধারন সম্পাদক এসএম ফুয়াদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক গাজী, অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল, দফতর সম্পাদক শেখ ফিরোজ, জেলা আওয়ামীলীগের হুমায়ুন বেপারী, স্বেচ্ছা সেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, একেএম আজিম,সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহ আলম প্রমুখ।
এদিকে অনুষ্ঠানে ১৮ ই জুন ২০২২ স্বরূপকাঠি উপজেলা আওয়ামীলীগের সন্মেলন হওয়ার দৃড়তা প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ।আওয়ামীলীগের স্বরূপকাঠি উপজেলা ও অনুষ্ঠানের সভাপতি আব্দুল হামিদ জানান ১৮ তারিখে সন্মেলনকে সামনে রেখে ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করার লক্ষে ৩৩ সদস্যের প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।পৌর মেয়র গোলাম কবির,গুয়ারেখা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর, স্বরূপকাঠি উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান এস এম মুইদুল ইসলাম কে যুগ্ন আহ্বায়ক করে সৈয়দ শহিদ উল আহসানকে আহ্বায়ক করা হয়।