Nabadhara
ঢাকাশনিবার , ৮ মে ২০২১
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

“পঁচিশের বহু স্বাদ”- স্বপ্ন শাহিন খান

Bayzid Saad
মে ৮, ২০২১ ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

“পঁচিশের বহু স্বাদ”

স্বপ্ন শাহিন খান

______________________

 

১. চারু অফিস করে ফিরেছে ভোরবেলা। ইদানিং অফিসে প্রচুর চাপ চলছে, প্রচুর রিক্রুটমেন্ট হচ্ছে, তাই টিম লিডার পুরোনোদের একটু বেশিই ভয়ে-ভয়ে রাখছে। ক্লান্তিমাখা ঘুম চোখে চারু তানপুরাটা নিয়ে বসল। ওকে গাইতে হবে, তারপর কিছু একটা ফেসবুকে দিতে হবে, রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষ্যে। ও লাইভে এসে গান গাওয়া শুরু করল, হঠাৎ কখন ভোর থেকে বেলা গড়িয়ে গেল, চারু বুঝতেই পারেনি। গানের পর গান দিয়ে সে তার চিরনতুনের জন্মদিন পালন করে গেল,

“কান্নাধারার দোলা তুমি থামতে দিলে না যে।

আমার পরশ ক’রে প্রাণ সুধায় ভ’রে

তুমি যাও যে সরে…

বুঝি আমার ব্যথার আড়ালেতে দাঁড়িয়ে থাক

ওগো দুখজাগানিয়া।”

…ফোনের চার্জ অনেক আগেই ফুরিয়ে গেছিল।

 

২. জয়ন্ত অস্ট্রেলিয়ায় একটা স্টোর ম্যানেজারের পদে নিযুক্ত, ও যখন অফিস করে বাড়ি ফিরে জানল আজ পঁচিশে বৈশাখ তখন তার বাড়ির শহরে সবাই ঘুমাচ্ছে আর তার কর্মস্থলে কোনো প্রতিবেশী বাংলা বোঝে না। তবু তার খুব গাইতে ইচ্ছে করল,

আর সে গুনগুন করে উঠল,

 

“আমার এ ঘর বহু যতন ক’রে

ধুতে হবে মুছতে হবে মোরে।

আমারে যে জাগতে হবে, কী জানি সে আসবে কবে

যদি আমায় পড়ে তাহার মনে

বসন্তের এই মাতাল সমীরণে।”

 

পাশে অ্যারোন, তার পাঁচ বছরের ছেলে হাতে-হাতে তাল দিচ্ছিল। জয়ন্ত আর সে সকালে ঘুমাল না।

 

৩। ইংলিশ অনার্সের ছাত্র অমল আজ তার কোচিং এর স্যারের থেকে ছুটি চেয়ে নিয়েছিল ঠাকুরবাড়ি ঘুড়তে যাবে বলে। রবীন্দ্রনাথ একটা মারাত্মক আবেগ তাই পরীক্ষার একমাস বাকি থাকলেও স্যার ছুটি মঞ্জুর করেন। তবে অমলের পৌছতে দেরী হয় এবং জোড়াসাঁকো বন্ধ হয়ে যায়। সে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে মনেমনে আউড়াতে শুরু করল—

 

“আমাদের গেছে যে দিন

একেবারেই কি গেছে…

কিছুই কি নেই ‘আমাদের গেছে যে দিন

একেবারেই কি গেছে–

কিছুই কি নেই বাকি?’

একটুকু রইলেম চুপ করে;

তার পর বললেম,

‘রাতের সব তারাই আছে

দিনের আলোর গভীরে।”

 

৪। আজ এই প্রথম অমিতের নতুন পাঞ্জাবি কেনা হয়নি, আজ তেমন কেউ আবৃত্তি প্রোগ্রাম করতেও ডাক পাঠায়নি। অনেক উঠতি কবি’র ভিড়ে অমিত পুরোনো হয়ে গেছে। সে ঘরের এক কোণে বসে বসে নিজের একটা লেখা আবৃত্তি করতে লাগল—

 

“লেখার বিষাদবাণী ছুঁয়ে যায় শহরের ধুলো,

সেইখানে ফেলে আসি কান্নার ভেজা ভেজা স্মৃতি।

তোমার ঝুড়িতে রাখা স্বপ্ন ও অবসাদগুলো

চেয়েছি বাদামি ঠোঁটে, প্রেমিকা ও পশমের গীতি।

হাওয়াতে বাহ্বা জোটে। মানুষের জীবনের কথা

তুমি লিখছ বরাবরই, কথা ওঠে কবিতাকে নিয়ে।

সে-সভাতে তুমি গুরু, বাকিদের ফাঁপা নীরবতা,

ইলিশের দাম বাড়ে। তুমি হাঁটো আলোপথ দিয়ে।

পাহাড়ের মায়ালেখা পড়ে চলি লন্ঠন জ্বেলে,

পাথরের কোণ ঘেঁষে একমনে ঝোলা নিয়ে হাঁটো।

এমন এক মানুষের ভালোবাসা আজীবন পেলে,

জীবনের মানে বুঝি। জাদুকর তুমি, কবি সম্রাট…”

 

রবীন্দ্র উচ্চারণের কোনো গতে বাঁধা স্থান-পরিধেয় কিংবা সময়, পরিস্থিতি হয় না।

রবীন্দ্রনাথ যেমনটা অসাধ্যতার বাইরে তেমনটাই ছোঁয়ানাড়ার মতোই স্বাভাবিক।

 

জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য, কবিসম্রাট।☘

 

চিত্রশিল্পী- নীলাঞ্জন

 

নবধারা/বিএস

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।