গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জে এলাহী সিকদার (২০) নামে সেনাবাহিনীর মামলার অজ্ঞাত আসামী মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৮ সেপ্টেম্বার) দিবাগত রাতে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে তাকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত এলাহী সিকদার গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের ফলসী চরপাড়া গ্রামের মহি সিকদারের ছেলে।
জেলা কারাগারসুত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনীর মামলার আসামী এলাহী সিকদারকে পুরো শরীরে আঘাত অবস্থায় গত ৪ সেপ্টেম্বর জেলা কারাগারে আনা হয়। সেখানে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় ওইদিন রাতেই তাকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তাকে কারাগারে নিয়ে আসা হয়। শনিবার রাতে এলাহীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাকে আবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই কুদরত সিকদার বলেন, আমার ভাইকে সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় সেনাবাহিনী গত ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ধরে নিয়ে আসে। পরে ৪ তারিখ জানতে পারি আমার ভাই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমরা হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পাই আমার ভাইয়ের পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন। তার কাছে জানতে চাই কিভাবে এমনটি হলো। সে আমাকে বলে তার চোখে কালো কাপড় বেঁধে কোথায় যেন নিয়ে যায়। এরপর বেধে বেধড়ক মারপিঠ করা হয়। এ কারনেই আমার ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার মৃত্যু হয়।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস জানান, এলাহী নামের এক হাজতিকে শনিবার রাত ১ টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। তাকে আমরা মৃত অবস্থায় পাই। এর আগে একবার শরীরে আঘাত নিয়ে গত ০৪ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল এলাহী সিকদার।
গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার (ভারপ্রাপ্ত) মো: আবুল হোসেন বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর মামলার আসামী এলাহী সিকদারকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এসময় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে তাকে ওইদিন রাতেই গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থেকে চিকিৎসা দেওয়া হলে কারাগারে নিয়ে এসে কারাগারের চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া হয়। পরে শনিবার রাত ১ টার দিকে তার শরীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে রাত দেড়টার দিকে মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ ও তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গত ১০ আগষ্ট গোপালগঞ্জের বিভিন্নস্থানে সশস্ত্র বিক্ষোভ করে কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। বিক্ষোভ চলাকালে সদর উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকায় হামলা চালিয়ে সেনা সদস্যদের মারপিট, সেনাবাহিনীর গাড়ী ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ এবং অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০৬ জনের নাম উল্লেখ ও ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ জনকে আসামী করে গত ২২ আগষ্ট গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করেন গোপালগঞ্জ অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: মাকসুদুল আলম। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামী হিসাবে গত ৩ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে এলাহী সিকদারকে গ্রেফতার