এস এম শরিফুল ইসলাম নড়াইল
নড়াইলে শহরে কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় পৌরবাসী চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা যেন নিত্য দিনের দৃশ্য। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি উঠে বসতঘর থেকে শুরু করে সরকারি অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পৌর এলাকার অধিকাংশ রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে গোড়ালি পর্যন্ত, আবার কোথাও কোথাও হাঁটু পরিমাণ।
রোববার (২৯জুন) বিকালে পৌর এলাকা ঘুরে দেখা যায়,গত সপ্তাহ ধরে হওয়া ভারি বৃষ্টিতে নিচু এলাকার বাড়ির উঠানে হাঁটু পানি, ঘরের মেঝেতে জমা পানির কারণে যার পর নেই দুর্ভোগে রয়েছেন পৌরবাসী। বসতঘর থেকে শুরু করে সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্ষার পানি উঠে হরহামেশাই। প্রতি বর্ষা মওসুমে আবাসিক এলাকার পাশাপাশি সড়কগুলো তলিয়ে যায় বৃষ্টির পানিতে। হাটা-চলায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় পৌরবাসীর। স্কুল-কলেজে যেতেও দুর্ভোগে পড়ে শিক্ষার্থীরা। কুড়িগ্রাম ও ভওয়াখালী এলাকার আশিকুর রহমান জানান, একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের মধ্য পানি ওঠে। রাস্তায় পানি জমে যায়। যে কারণে চলাফেরা বিঘিœত হয়। নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ফারদিন শাহরিয়ার খান জানায়, বৃষ্টি হলেই রুপগঞ্জ মুচির পোল থেকে উত্তর দিকে নেমে আসা রাস্তা প্রেসক্লাব পর্যন্ত পানিতে ডুবে থাকে। এ কারণে স্কুলে যেতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
শহরের রুপগঞ্জ গোহাটখোলার বাসিন্দা মর্জিনা বেগম বলেন, মুসলধারের বৃষ্টি হলেই আমাদের বসত ঘরের মধ্যে হাঁটু পানি হয়ে যায়। রান্নাঘর, টিউবওয়েল ও টয়লেট তলিয়ে যায়। রান্না পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। বিছানা বালিশ-কাঁথা পর্যন্ত পানিতে ভিঁজে যায়। একই এলাকার গৃহবধু সুলতানা জানান, মুসলধারে বৃষ্টি হলেই আমাদের মহল্লার সমস্ত বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি বেশি হলেই আমাদের কষ্ট বেড়ে যায়। নড়াইল পৌর এলাকার দুর্গাপুর,ভওয়াখালী, গোহাটখোলা,ভাদুলিডাঙ্গা,আলাদাতপুর,হাটবাড়িয়া, বরাশুলা ও মহিষখোলাসহ অধিকাংশ এলাকার চিত্র একই। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পৌর এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি নিষ্কাশনের অভাবে বর্ষা মওসুমজুড়ে পানিবন্দি থাকতে হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন পৌর এলাকায় বসবাসরত লোকজন।
পৌরসভা সূত্র মতে, ১৯৭২ সালে ২৮.৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে গঠিত নড়াইল পৌরসভাটি প্রথম শ্রেনির পৌরসভায় উন্নীত হয় ১৯৯৯ সালে। শহরের জন্য প্রয়োজনীয় ৫৫ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থার মধ্যে আছে মাত্র ৩ কিলোমিটার। যেটি নির্মিত হয় আরও ২০ বছর আগে। পরবর্তীতে নতুন করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মিত হয়নি।
নড়াইল পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক জুলিয়া সুকায়না বলেন, প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়া সাপেক্ষে ড্রেনেজ নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতার সমাধান করা হবে। জরুরী ভিত্তিতে জলাবদ্ধ পানি নিস্কাসনের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে।