মতিয়ার রহমান মধু, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় সাতদিনের টানা মুষলধারে বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল এখন পানির নিচে। জনবসতি, মাছের ঘের, সবজির ক্ষেত ও বিভিন্ন স্থাপনা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা, কুল্যা, দরগাহপুর, কাদাকাটি, আশাশুনি সদর, শ্রীউলা, খাজরা, আনুলিয়া, প্রতাপনগর, বড়দল ও শোভনালী ইউনিয়নের অসংখ্য নিম্নাঞ্চলে বসতবাড়ি, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, টিউবওয়েল পানির নিচে চলে গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার চরম অবনতি।
মৎস্য ঘেরগুলোর মালিকরা জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টির ফলে বহু ঘেরের বাঁধ তলিয়ে গেছে। মাছ রক্ষা করতে তারা বাঁধের ওপর নেটজাল টেনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বুধহাটা গ্রামের অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম জানান, বেতনা নদী খননের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় এবং চাপড়ার কাছে নদীর প্রবাহ বন্ধ থাকায় বৃষ্টির পানি নদীতে নামতে পারছে না। এতে আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা বাড়ছে।
নৈকাটি গ্রামের মাওলানা মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমি জলমগ্ন বহু এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানি নিস্কাশনের জন্য খালের মুখ খনন ও মরিচ্চাপ নদীতে পানি সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”
নাগরিক নেতা প্রভাষক ইয়াহিয়া ইকবাল বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে ঘেরের পাশে থাকা নেটপাটা অপসারণ, পুরাতন ম্যাপ অনুযায়ী খাল-নদী খনন, বিকল স্লুইস গেট সংস্কার এবং খাল খননে দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা প্রয়োজন।”
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সত্যজিত মজুমদার জানান, অধিকাংশ মৎস্য ঘের এখন হুমকির মুখে। অনেক ঘের ইতিমধ্যেই তলিয়ে গেছে।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় নদীর বাঁধ পরিদর্শন করেছেন এবং বলেন, “বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী খনন, খাল খনন ও কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে। এতে পানি নিস্কাশন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।”