সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দেনাদারের হামলায় মুজিবর রহমান (৬৫) নামের এক পাওনাদার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার ছেলে আলমগীর গাজী (৩৫) ও জামাই আবুল কালাম (৪২)।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুজিবর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। তিনি শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের বংশীপুর গ্রামের আহাদ আলী গাজীর ছেলে।
নিহতের ছেলে আলাউদ্দিন গাজী জানান, তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বৈদ্য সরকার ও তার ভাই অমল সরকারের সঙ্গে মাছের ঘের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায়িক লেনদেনের অংশ হিসেবে বৈদ্য সরকারদের কাছে প্রায় ৯০ হাজার টাকা পাওনা ছিলেন তার বাবা। তবে বৈদ্য সরকাররা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা করছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, মুজিবর রহমান বিএনপির ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ছিলেন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতা মামলাও দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি পাওনা টাকা আদায়ে চাপ দিলে দেনাদারেরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
গত ২৪ আগস্ট সকাল ৭টার দিকে মুজিবর রহমান বংশীপুর যাওয়ার পথে বৈদ্য সরকারের বাড়ির সামনে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বৈদ্য সরকার, তার ভাই অমল সরকারসহ কয়েকজন মিলে তার পথ রোধ করে। একপর্যায়ে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে, এতে তার মাথা ফেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়।
নিহতের আরেক ছেলে আলমগীর গাজী ও ভগ্নিপতি আবুল কালাম তাকে উদ্ধারে গেলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে মুজিবরের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সাতক্ষীরার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় বৈদ্য সরকার, অমল সরকারসহ ছয়জনকে আসামি করে শ্যামনগর থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্লা জানান, এজাহার পাওয়া গেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে বৈদ্য সরকার বা অমল সরকারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।