মোঃ ইব্রাহীম মিঞা,দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুর জেলার প্রথম শ্রেণীর বিরামপুর পৌরসভার আওতাধীন কলাবাগান মহাসড়কসংলগ্ন ব্যস্ততম খান সুপার মার্কেট মৌলিক নাগরিক সুবিধা থেকে দীর্ঘদিন ধরেই বঞ্চিত।
নিয়মিত পৌরকর ও ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের মাধ্যমে প্রতিবছর পৌরসভার কোষাগারে লাখো টাকা জমা হলেও বাজারে কার্যকর কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই মার্কেট ও সড়ক জলাবদ্ধ হয়ে কাদা-ময়লায় ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও পথচারীদের নাজেহাল হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
অভিযোগ উঠেছে, বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও পৌরসভা ড্রেন নির্মাণে উদ্যোগ নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে মার্কেট মালিক তৌহিদুর রহমান খান নিজ উদ্যোগে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ১৩৬ ফিট ড্রেন ও স্লাব নির্মাণ করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে এ দায়িত্ব কি পৌরসভার নয়?
পৌরসভার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৬৪ কোটি ১৮ লক্ষ ৩৫ হাজার ৪০৪ টাকা। এর মধ্যে ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কারে ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। অথচ পরবর্তী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫১ কোটি ৯৬ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩০০ টাকার বাজেটে ড্রেনেজ খাতে রাখা হয় মাত্র ৬৯ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু মাঠপর্যায়ে কলাবাগান মার্কেটে আজও কোনো স্থায়ী ড্রেন নির্মাণ হয়নি।
ড্রেনেজ সংকট শুধু মার্কেটে সীমাবদ্ধ নয়। পাশের বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ, যেটি “বড় মাঠ” নামে পরিচিত, সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি জমে যায়। মাঠসংলগ্ন ড্রেনগুলো বছরের পর বছর অপরিষ্কার থাকায় পানি আটকে থাকে দীর্ঘ সময়। স্থানীয়দের দাবি কলাবাগান খান সুপার মার্কেট থেকে বিরামপুর প্রাণিসম্পদ ভেটেরিনারি হাসপাতাল পর্যন্ত কার্যকর ড্রেন সংযোগ স্থাপন করা গেলে পানি নিষ্কাশন সমস্যার সমাধান হতো।
ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা নিয়মিত কর দিই, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করি। অথচ মৌলিক সুবিধার জন্য আবার আমাদের পকেট থেকে টাকা খরচ করতে হয়। তাহলে পৌরসভার ভূমিকা কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ড্রেন নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা পৌরসভার সাংবিধানিক দায়িত্ব। অথচ কর আদায়ে শীর্ষে থাকা বিরামপুর পৌরসভা নাগরিক সেবায় বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন—পৌরসভা কি শুধু রাজস্ব আদায়ের যন্ত্রে পরিণত হয়েছে?
বিরামপুর পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম সাংবাদিককে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন—আপনি বাজেট জেনে কী করবেন?
পরে পৌরসভার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান বাজেটের তথ্য নিশ্চিত করেন।
এই মনোভাব স্থানীয়দের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। তাদের একটাই দাবি কর আদায়ের টাকায় যেন শুধু কাগুজে বাজেট নয়, বাস্তব উন্নয়ন হয়।