মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ কার্যকর থাকলেও তথ্য প্রার্থীরা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নির্ধারিত ফরম সহজলভ্য না থাকায় দিনাজপুরে এক সাংবাদিকের আপিল আবেদন গ্রহণে অনীহা দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তথ্য না দেওয়ার কারণে সাংবাদিকরা বারবার হুমকি ও হয়রানির মুখে পড়ছেন।
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী সরকারি তথ্য প্রাপ্তি প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার হলেও বাস্তবে এই অধিকার প্রয়োগে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অনীহার কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন আবেদনকারীরা।
দিনাজপুরের বিরামপুরের সাংবাদিক মোঃ ইব্রাহীম মিঞা জানান, তিনি গত ০৬ জুলাই ২০২৫ তারিখে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, বিরামপুর বরাবর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন। সেখানে তিনি বিরামপুর পৌর দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সনদের কপি চান। আইন অনুযায়ী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা প্রদান করা হয়নি।
এরপর তিনি প্রায় ৫৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আপিল করতে যান। কিন্তু সেখানেও নির্ধারিত ফরমে আবেদন না করার অজুহাতে তাঁর আপিল গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তথ্য চাইলে যদি ৫৪ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েও হয়রানির শিকার হতে হয়, তথ্য না দেওয়ার কারণে যদি হুমকির মুখে পড়তে হয়, তবে জনগণ কীভাবে তাদের অধিকার ভোগ করবে?”
শুধু তিনিই নন, একই সমস্যায় পড়েছেন আরও সাংবাদিকরা। গত ৩১ আগস্ট “আজকের বিজনেস বাংলাদেশ” ও ডেল্টা টাইমস এর বিরামপুর প্রতিনিধি একই বিষয়ে তথ্য অধিকার ফরমে জেলা শিক্ষা অফিসে আপিল করেও আজ পর্যন্ত কোনো তথ্য পাননি।
স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন, নির্ধারিত ফরম যদি বাধ্যতামূলক হয় তবে কেন তা অফিসে সহজলভ্য রাখা হয় না এবং কেন কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের সহযোগিতা না করে উল্টো হয়রানিতে ফেলেন?
এবিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তথ্য অধিকার আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন না হলে এটি কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে। আর এর ফলে সরকারি কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।