মোঃ জিহাদুল ইসলাম, কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের চাচুড়ী বাজার এলাকায় অবৈধ ভাবে সরকারি জমি দখল করে জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে খোদ সরকারী কর্মকর্তা ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা নুরজাহান আক্তার শিপ্রার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে ওই কর্মকর্তা চাচুড়ী বাজারের সরকারি ১নং খাস খতিয়ানের জমি দখল করে অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। তিনি বর্তমানে একই উপজেলার কলাবাড়ীয়া ইউনিয়ন উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। প্রশাসনের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই সরকারি জমি দখল করে অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মাণ করায় সচেতন মহলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিষয়টি উপজেলা ভূমি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
এমন ঘটনা জানতে পেরে ২ আগষ্ট (সোমবার) স্থানীয় এক সাংবাদিক (দৈনিক জন্মভুমি পত্রিকার কালিয়া প্রতিনিধি) তথ্য অনুসন্ধানে ঘটনাস্থলে গেলে দখলদারদের রোষানলে পড়েন।
এ সময় তারা সাংবাদিকের কাছে থাকা ক্যামেরা, মোবাইল ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি দেখানো হয় পেশিশক্তি। অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয় ওই সাংবাদিক পুরুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আশ্রয় নেন। অতঃপর পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওই সাংবাদিকের মোটরসাইকেল টি উদ্ধার করা হয় বলে জানান ঐ সাংবাদিক।
ঘটনাসুত্রে জানা যায়, উপজেলার ২নং পুরুলিয়া ইউনিয়নের ২৯নং ধারিয়াঘাটা মৌজার আর এস দাগের ৮৫ নং হালের জমিটি ১নং সরকারি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত। কিন্ত সরকারি চাকরির প্রভাব খাটিয়ে এওই কর্মকর্তা সরকারি জমি দখল করে একটি দোকান নির্মাণ করার চেষ্টা চালান। এসময় সাংবাদিক ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলা করে নুরজাহান আক্তার শিপ্রার ছেলে মেহেদী ও তার সহযোগীরা। ওই সাংবাদিক প্রশাসনের কথা বললেও নুরজাহান আক্তার শিপ্রার ছেলে মেহেদী হুমকি দিয়ে বলেন ইউএনও এসিল্যান্ড আমার বাম পকেটে থাকে।
তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, নুরজাহান আক্তার শিপ্রা উপজেলার সালামাবাদ ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কালিন আর্থিক অনিয়মের কারণে এলাকাবাসীর রোষানলে পড়লে তাকে কলাবাড়ীয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বদলি করা হয়। বর্তমানে কলাবাড়ীয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসেও নুরজাহান আক্তার শিপ্রার বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনসহ ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বাজারের ব্যবসায়ী রাজীব মোল্যা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মেহেদী (নুরজাহান আক্তার শিপ্রার ছেলে) সকলের সামনে ওই সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিয়েছে ও শারীরীকভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেছে।
এ ঘটনায় ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা নুরজাহান আক্তার শিপ্রা জানান, আমার ছেলে মেহেদী সাংবাদিকের সাথে যে আচরন করেছে এ বিষয়ে সাংবাদিকের কাছে মাফ চেয়েছি।
এ বিষয়ে কালিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ জহুরুল ইসলাম জানান, সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়টি আমি জেনেছি। এ বিষয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে ব্যাবস্থা নিব।
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল ইসলাম নবধারা কে জানান, সরকারি জমি দখলের চেষ্টা ও সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং স্থাপনা নির্মাণ স্থগিত করেছি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।