Nabadhara
ঢাকাবুধবার , ১ অক্টোবর ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ধর্মীয় সম্প্রীতি, পাশাপাশি নামাজ আর পূজা তেরখাদার জয়সেনা বাজারে

রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
অক্টোবর ১, ২০২৫ ৩:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি

খুলনার তেরখাদা উপজেলার জয়সেনা বাজার যেন এক নিঃশব্দ শিক্ষা—ধর্ম আলাদা হলেও সহাবস্থান সম্ভব, শ্রদ্ধাবোধই পারে বিভেদের দেয়াল ভাঙতে।

এখানকার মাছের চান্দিনার পাশে, একই আঙিনায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে একটি মসজিদ ও একটি দুর্গাপূজা মণ্ডপ। বহু বছর ধরে এখানে চলে আসছে এক অপূর্ব দৃশ্য—একদিকে মসজিদের মিনারে বেজে ওঠে আজান, অন্যদিকে পূজামণ্ডপে বাজে শঙ্খ, ঢাক আর ঘণ্টা। তবু কখনো মুখোমুখি সংঘাত নয়, বরং দুই ধর্মাবলম্বীর মধ্যে চলে এক নিরব বোঝাপড়া।

এ বছর ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজা। জয়সেনা বাজারের রাজবংশী সার্বজনীন পূজামণ্ডপেও সাজসাজ রব। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভক্তদের আগমন, মন্ত্রপাঠ, আরতি আর ঢাকের ছন্দে মুখর মণ্ডপ। এরই মাঝে যখন জামে মসজিদে নামাজের সময় হয়, পূজার অনুষ্ঠান কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায়। পূজার গান থেমে দাঁড়ায় নামাজের প্রতি সম্মানে। আবার নামাজ শেষ হলে শুরু হয় পূজার আনন্দের ধারা।

এই সহযোগিতা বা সমঝোতার পেছনে নেই কোনো চাপ, নেই কোনো বাধ্যবাধকতা। এলাকাবাসী এটিকেই মনে করেন সৌহার্দ্য ও সহনশীলতার দীর্ঘদিনের চর্চা।

পূজামণ্ডপে আসা কলেজছাত্রী সন্ধ্যা বিশ্বাস বলেন, “আমরা ছোট থেকে দেখে এসেছি, একপাশে পূজা হয়, পাশেই নামাজ চলে। কেউ কাউকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করে না। বরং সবাই একে অপরকে সম্মান করে।”

জামে মসজিদের মুসল্লি সোহেল শেখ জানান, “নামাজের সময় পূজার গান বন্ধ থাকে। নামাজ শেষ হলে তারা আবার পূজা শুরু করে। একসঙ্গে থাকলে বোঝাপড়াটাই মুখ্য।”

রাজবংশী সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি অপু বৈরাগী বলেন, “ছেলেবেলা থেকেই দেখছি—এক আঙিনায় দুই ধর্মের মানুষ ধর্মীয় আচরণ পালন করছে। কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করি।”

মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ হাসান বলেন, “আমরা আমাদের ধর্ম পালন করি, তারা তাদের। পূজার সময় তারা নিজ থেকেই গান-বাজনা বন্ধ রাখেন নামাজের সময়। ইসলাম অন্য ধর্মকে সম্মান করতে শেখায়, এখানেও তাই করা হয়।”

সাংবাদিক ডা. সুধাংশু বিশ্বাস বলেন, “ধর্ম নিয়ে এই এলাকায় কোনো বিরোধ কখনো হয়নি। বরং একে অপরের উৎসবে সৌহার্দ্য সহকারে অংশগ্রহণ করা হয়। এটাই আমাদের সংস্কৃতি।”

উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির তথ্য অনুযায়ী, এ বছর তেরখাদায় ৯৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে জয়সেনা বাজারের এই মণ্ডপ যেন আলাদা জায়গা দখল করে নিচ্ছে সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে।

যেখানে পূজার গান কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায় নামাজের সময়, আর নামাজ শেষে আবার শুরু হয় উৎসবের ছন্দ—সেই জায়গাটি শুধু তেরখাদার নয়, পুরো দেশের জন্য হয়ে ওঠে সম্প্রীতির এক নিঃশব্দ বার্তা।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।