সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন আ: সালাম বলেছেন টাইফয়েডের টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও জীবন রক্ষাকারী । আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই টিকা দান ক্যাম্পেইনে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিশুদের টিকা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, মাসব্যাপী এই ক্যাম্পেইনে ৫ লাখ ৬ হাজার ৭৫৮ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৭৫০ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া, কমিউনিটির (শিক্ষার্থী ব্যতীত) এক লাখ ৬৬ হাজার ৮ জনকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে নিবন্ধন করা জরুরি। ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে ইপিআই ভ্যাকসিনেশন আ্যপের (VAXEPI) মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন (www. vaxepi.gov.bd) করতে হবে।
সিভিল সার্জন আ: সালাম বলেন, যারা রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নেবেন তাদের সাথে সাথেই টিকার সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। যা পরবর্তীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি
হওয়া, বিদেশ যাওয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তবে, নিবন্ধন ছাড়াও টিকা নেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে টিকা দেওয়ার পর তার সার্টিফিকেট পেতে দেরি হবে। টিকা গ্রহণকারীর নাম ঢাকায় পাঠানো হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিবন্ধন হওয়ার পর তারা সার্টিফিকেট পাবেন। এটি সময় সাপেক্ষ। তাই, টিকা গ্রহণের আগেই নিবন্ধন করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সিভিল সার্জন আরো বলেন, দ্য গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজের সমীক্ষা অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং ৮ হাজার জন মৃত্যুবরণ করেন। যার মধ্যে ৬৮ শতাংশই শিশু।
শিশুদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। সুতরাং মারণঘাতি টাইফয়েডের সুরক্ষায় অভিভাবকসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর) সকালে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত প্রেসব্রিফিং এ সিভিল সার্জন ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইসমত জাহান সুমনা, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক জি, এম মনিরুল ইসলাম মিনি, প্রেসক্লাবের সদস্য মিজানুর রহমান,শেখ মাসুদ হোসেন, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, এম রফিক, আব্দুল জলিল, এম জিল্লুর রহমানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
অনুষ্ঠানে টাইফয়েডের বিস্তারিত উপস্থাপন করেন – বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাসেদ মৃধা ।
তিনি বলেন, টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়াবাহী। মানুষের মল, নর্দমার নোংরা বর্জ্য, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, দুষিত খাবার ও পানি পানের মাধ্যমে টাইফয়েডের বিস্তার ঘটে।
তিনি আরো বলেন, জীবাণু শরীরে প্রবেশের পর গড়ে ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে টাইফয়েড জ্বর হয়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি ৩ দিন থেকে ২ মাস পর্যন্ত হতে পারে। এটি মারাত্মক ও জীবনঘাতি। তাই, টাইফয়েড প্রতিরোধে সাতক্ষীরাসহ দেশব্যাপী ১২ অক্টোবর ২০২৫ সরকার টিকাদান ক্যাম্পেইনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। যা আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের সকল শিশুদের টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অভিভাবকদের কাছে।
টিকা নেওয়ার সময় ভরা পেটে আসার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই টিকা অনুমোদন দিয়েছে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এটি শতভাগ হালাল। তাই, কোনো রকম গোড়ামি বা গুজবে কান না দিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান মেডিকেল অফিসার ডা: রাশেদ মৃধা।