মুকুট রঞ্জন দাস, তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
সারা দেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধি, ১৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা এবং শতভাগ উৎসবভাতা প্রদানের দাবিতে সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
রবিবার ঢাকায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশের শিক্ষাঙ্গন। ফলে প্রায় সব বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।
রোববার(১২অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক অবস্থান কর্মসূচি থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে বলেন,“আমরা শিক্ষকরা রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ। অথচ আমাদের ন্যায্য দাবি বারবার উপেক্ষিত হয়েছে। এবার আর আশ্বাস নয়,দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” এর আগে ঢাকায় দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারসেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হন। পরবর্তীতে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।“৫০০ টাকার প্রজ্ঞাপন অপমানজনক।”
অধ্যক্ষ আজিজী আরও বলেন, “আমরা মানুষ গড়ি, সমাজ গড়ি। অথচ আমাদের জীবনমান দিন দিন অবনতি হচ্ছে। সরকারের ঘোষিত মাত্র ৫০০ টাকার বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধি শিক্ষক সমাজের প্রতি অপমানজনক।” শিক্ষক সংগঠনগুলোর দাবি, গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিক্ষা উপদেষ্টা এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা এবং শতভাগ উৎসবভাতা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করলে শিক্ষক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, শিক্ষকরা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।“আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের আন্দোলন করছি না। আমাদের একটাই দাবি ন্যায্য ভাতা বৃদ্ধি। পুলিশের দমননীতি আমাদের আন্দোলনকে আরও ঐক্যবদ্ধ করেছে। শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, এই কর্মবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হলে শিক্ষাব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব পড়বে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হবে, পরীক্ষার সময়সূচি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এবং সেশনজটের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকার শিক্ষকদের দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে এবং দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ চলছে।তবে আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন “দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।”