আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ি-থ্রীপিচ ও মাদক আটক করেছে বিজিবি। ভারত থেকে খৈল আমদানির মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে জবা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এসব মালামাল ভোমরা স্থলবন্দরে আনা হয় বলে জানিয়েছে বিজিবি।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কর্ণেল মোঃ আশরাফুল হক প্রেসবার্তায় জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ভারত থেকে একটি খৈল বোঝাই ট্রাক (WB -57D6151) আইসিপি দিয়ে ভোমরা স্থলবন্দরে আনা হচ্ছে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ট্রাকের খৈল বস্তার ভেতরে উন্নত মানের শাড়ি,থ্রী-পিচ ও মাদক রয়েছে।
বিষয়টি ভোমরা বিজিবি ক্যাম্পকে অবহিত করা হলে বিজিবি সদস্যরা ট্রাকটি নজরে রাখে। এক পর্যায়ে ভারতীয় ট্রাকটিতে ৩০ টন খৈল আছে মর্মে বিজিবি চেকপোস্টে কাগজপত্র লিপিবদ্ধ করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে প্রবেশের পর ফলমোড় নামক স্থানে অবস্থান নেয়। এরপর চালককে রাস্তার পাশে সাইড করে রাখার কথা বললে চালক বিজিবির আদেশ অমান্য করে দ্রুত ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস পার্কিং চলে যায়।
সেখানে ভারতীয় ওই ট্রাক থেকে বাংলাদেশের দুটি ট্রাকে মালামাল আনলোড শুরু করে লেবাররা।
এসময় বিজিবি সদস্যরা ট্রাকের কাছে গেলে কৌশলে গাড়ির চালক – হেলপাররা পালিয়ে যায়।
পরে তল্লাশি চালিয়ে ট্রাক থেকে ২০ হাজার কেজি খৈল, অতি উন্নত মানের শাড়ি ২ হাজার ৪৮৯ পিচ, উন্নত মানের শাড়ি ২১০০ পিচ, অতি উন্নত মানের থ্রি-পিচ ৩৫৮ পিচ, উন্নত মানের থ্রি-পিচ ১৫০ পিচ, ব্লাউজ ২৫০ পিচ, ফেনসিডিল ১৫০ বোতল উদ্ধার করা হয়। একই সাথে ভারতীয় ট্রাক ও বাংলাদেশি দুটি ট্রাক জব্দ করা হয়।
বিজিবি অধিনায়ক আরো বলেন, এরপর রাতেই আটককৃত মালামাল ও ট্রাকগুলো ব্যাটালিয়ন সদরে আনা হয়। আজ সোমবার সেগুলো সিজার তালিকায় নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় জমা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আটক ট্রাক ও ভারতীয় মালামালের মূল্য ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৩৯ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল গফুর সরদার জানান, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে খৈলের আড়ালে এধরনের মালামাল নিয়ে আসাটা বন্দরের জন্য ক্ষতিকর। এমন ধরনের কর্মকাণ্ডে বন্দরের সৎ ব্যবসায়ীদের বদনাম হয়।
তিনি আরো বলেন,
জবা এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানের (লাইসেন্স) মালিক তানভীর হোসাইন সুজন। তিনি সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।
তাঁর নামীয় এই লাইসেন্সটি ভাড়া করে মালামাল আমদানি করেছেন, সাতক্ষীরা সদরের লাবসা গ্রামের রইছুল হক টুকু ওরফে টুকু মাষ্টার। তিনি বলেন, রইছুল হক টুকুর নিজস্ব লাইসেন্স রয়েছে। তিনি নিজের লাইসেন্সে মালামাল না এনে ভাড়া করা লাইসেন্সে এই আকাম করেছেন।