জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরের মেলান্দহে ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে চিহ্নিত দুষ্কৃতিকারীদের হুমকি ও অবরোধে গ্রীন বায়োটেকনোলজি নামের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদনসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সন্ত্রাসীরা কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভেতরে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। এতে গত সোমবার সকাল থেকে পুরো কারখানার কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। মালিকপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানালেও এখনো কোনো প্রতিকার মেলেনি।
আওয়ামী লীগের দোসর শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনের নির্দেশে তাঁর সহযোগী জান্নাতুল হুমায়রা জেমি, এনামুল হাসান, জাহাঙ্গীর, কামরুল ইসলাম, ফজলু শেখ, আব্দুল সালাম, মো.আরশাদ, মো.সোহেল ও আব্দুল আওয়ালসহ প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এই বিষয়ে মেলান্দহ থানায় একাধিকবার অভিযোগ দিয়ে কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর আগেও একাধিকবার ওই কারখানায় ওইসব সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের চেষ্টা করা হয়। এসব ঘটনায় গত ৯ অক্টোবর মেলান্দহ থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
ওই কারখানার সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা মো.রাসেল হোসেন বলেন-গত সোমবার সকালে কারখানায় কর্মকর্তা-কর্মচারিরা প্রবেশ করতে যান। এ সময় ওইসব সস্ত্রাসীরা কারখানায় ঢুকতে বাঁধা প্রদান করেন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। ওইসব সস্ত্রাসীরা এ কারখানার শ্রমিক অনামিকা রেজাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়। কারখানার ভিতরে কেউ প্রবেশ করতে পারছেন না। আমার ভিতর থেকে কেউ বাহিরেও আসতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন- সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে কারখানাটি। শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে দুষ্কৃতিকারী দল কারখানার প্রধান ফটকে ও এলাকার আশেপাশে অবস্থান করে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। ফলে সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
গ্রীন বায়োটেকনোলজির ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বলেন- ‘আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু মেলান্দহ নয়, বরং জামালপুর জেলার গ্রামীণ অর্থনীতি তথা সারাদেশেও কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। শত শত পরিবার এই কারখানার আয়ের উপর নির্ভরশীল। অথচ কিছু দুষ্কৃতিকারীর অব্যাহত সন্ত্রাসে এই শিল্প কারখানা এখন ধ্বংসের হুমকির মুখে পড়েছে। এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ যদি দ্রুত বন্ধ না করা হয়। বড় বড় উদ্যোক্তারা উপজেলা শহরে এই ধরণের প্রতিষ্ঠান করা থেকে নিরুৎসাহিত হবে। ফলে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। দ্রুত আমাদের কারখানাটি খুলে দেওয়া ব্যবস্থা করা হক।’
শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনে দেশের বাহিরে থাকায় তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন- লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।