রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার তেরখাদা উপজেলার স্বনামধন্য ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিত্রা মহিলা ডিগ্রি কলেজ এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অর্জন করেছে এক নজরকাড়া সাফল্য। কলেজটির ৯৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯০ দশমিক ৩২ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। এ সাফল্যে কলেজ প্রাঙ্গণ যেন পরিণত হয়েছে উৎসবে।
বৃহস্পতিবার তেরখাদা উপজেলা সদরের কলেজ চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, ফলাফল হাতে পাওয়া শিক্ষার্থীদের মুখে হাসির ঝিলিক। কেউ আনন্দে উল্লাস করছে, কেউ আবার বন্ধুর সাফল্যে গর্বে জড়িয়ে ধরছে একে অপরকে। পাশে দাঁড়িয়ে অভিভাবকেরা হাসিমুখে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সন্তান ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
ফলাফলের অনুভূতি জানাতে গিয়ে শিক্ষার্থী তানজিমা বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমি জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমার এই অর্জনের পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার মা-বাবা। তাঁদের সহযোগিতা ও দোয়ার কারণেই আজকের এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতে আমি মানুষের মতো মানুষ হয়ে সমাজের জন্য কাজ করতে চাই।”
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী আছিয়া খাতুন জানালেন, “আলহামদুলিল্লাহ, ফলাফল হাতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এটা আমার জীবনের এক অবিস্মরণীয় আনন্দের মুহূর্ত।”
সন্তানদের সাফল্যে খুশি অভিভাবকরাও। জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী আছিয়ার মা মারজিদা বেগম বলেন, “আমার মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে—আলহামদুলিল্লাহ, এটি আমাদের পরিবারের জন্য অনেক বড় আনন্দের বিষয়। শুধু আমার মেয়েই নয়, পুরো চিত্রা মহিলা কলেজের ভালো ফলাফল আমাকে গর্বিত করেছে।”
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, এবছর বিজ্ঞান বিভাগে অংশগ্রহণকারী ১৩ জনের মধ্যে ১১ জন, মানবিক বিভাগের ৭১ জনের মধ্যে অধিকাংশ, এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ১১ জনের মধ্যে ১০ জন শিক্ষার্থী কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে। মোট ৯৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।
এ প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ এস এম মিজানুর রহমান বলেন, “এটি আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য এক গর্বের অর্জন। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত অধ্যয়ন, শিক্ষকদের নিবেদন এবং অভিভাবকদের আন্তরিক সহযোগিতার কারণেই এমন সাফল্য সম্ভব হয়েছে। সামনে শিক্ষার্থীদের আরও বড় পথ পাড়ি দিতে হবে—আমি আশাবাদী, তারা যেখানেই সুযোগ পাবে, সেখানেই নিজেদের মেধা ও সততার প্রমাণ রাখবে।”
অধ্যক্ষ আরও বলেন, “আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি এই ফলাফলের জন্য। এটি সবার সম্মিলিত পরিশ্রমের ফল।” তিনি সাফল্যের জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকমণ্ডলীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তেরখাদার নারীদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে চিত্রা মহিলা ডিগ্রি কলেজ। এবারের ফলাফল সেই ধারাবাহিকতারই উজ্জ্বল প্রমাণ।