আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মৎস্যজীবী খায়রুজ্জামানের ১১টি মাছ ধরার বেড় জাল। এতে প্রায় বিশ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী। এক বছরের পরিশ্রম ও স্বপ্ন মুহূর্তেই মিশে গেল ধুলায়।
জানা যায়, প্রতাপনগরের চাকলা গ্রামের মৎস্যজীবী খায়রুজ্জামান (খায়রুল ইসলাম) সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তিনি ও তাঁর সঙ্গে থাকা প্রায় ৩০-৩২ জন মৎস্যজীবী বন বিভাগের অনুমতি পেলেই সাগরের দুবলার চরে পাঁচ মাসব্যাপী মাছ ধরার পরিকল্পনায় জাল প্রস্তুত করছিলেন। সোমবার সকালে নৌকায় জাল তুলে নিয়ে সাগরে যাওয়ার কথা থাকলেও, তার আগেই রবিবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় খায়রুলের ১১টি বেড় জালে।
দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া জালগুলো তৈরি করতে সময় ও অর্থ উভয়ই বিনিয়োগ করেছিলেন খায়রুজ্জামানসহ স্থানীয় আরও কয়েকজন মৎস্যজীবী। এ ঘটনায় তাদের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় মাওলানা তৌহিদুজ্জামান জানান, “রাতের বেলা রাস্তায় চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি খায়রুজ্জামানের জাল দাউ দাউ করে জ্বলছে। আমরা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি, কিন্তু পেট্রোলের গন্ধ পেয়েছিলাম।”
স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, “আগুন নিভানোর পর রাস্তার পাশে একটি গ্যাস লাইট পড়ে থাকতে দেখি।”
ঘটনার পর খায়রুজ্জামান আশাশুনি থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি শাহ ওহিদুজ্জামান শাহিন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা রিয়াছাত আলী, ইউনিয়ন আমীর মাও. অহিদুজ্জামান, নায়েবে আমীর মাও. শফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি মাও. আল-আমিন, সাংবাদিক আবু সালেহ প্রমুখ।
দীর্ঘদিন ধরে বন্যা, প্লাবন ও নদীভাঙনের শিকার প্রতাপনগরের মানুষদের জন্য সাগরে মাছ ধরা একমাত্র জীবিকার পথ। জলে কুমির, নদীতে ডাকাত, আর এখন স্থলভাগেও প্রতিহিংসা—সব মিলিয়ে জীবন আজ ভয়াবহ অনিশ্চয়তায় ঘেরা। মৎস্যজীবীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।