আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকারি নিয়মনীতি অমান্য করে প্রকাশ্যে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রশাসনের নীরব ভূমিকার কারণে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড দিনে-দুপুরে ঘটলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা-শ্বেতপুর এলাকায় গত দুই মাস ধরে একটি মৎস্য ঘের থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে এলাকার ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও রাস্তা-ঘাট ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে বেউলা মায়ের মন্দির সংলগ্ন এলাকায় কিছু প্রভাবশালীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, প্রশাসনকে একাধিকবার জানালেও কোনো প্রতিকার মিলেনি। বরং যারা প্রতিবাদ করছে, তাদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। বেউলা গ্রামের এক কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমাদের ফসলি জমি ঝুঁকির মুখে। এভাবে বালু তোলা বন্ধ করতে বললে উল্টো হুমকি দেয় কায়েম সরদার।”
ড্রেজার মেশিনের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রতিদিন হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করেন এবং স্থানীয় এক নেতার অধীনে এই কাজ চলছে। এলাকার বিভিন্ন স্থানে বালুর ভিট তৈরি করে তা বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্ত কায়েম সরদার, আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বাসিন্দা, সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বালু তুলছি। কোনো ক্ষতি হবে না। সব কিছু ম্যানেজ করা আছে—আমার কিছুই হবে না।”
তবে আশাশুনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার মাধ্যমে জানলাম। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে এলাকাবাসী দাবি করেছেন, বেউলা-শ্বেতপুরসহ আশাশুনির বিভিন্ন ইউনিয়নে চলমান অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের জরুরি অভিযান ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

