Nabadhara
ঢাকামঙ্গলবার , ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জয়পুরহাট দুই আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি, কোমর বেঁধে নেমেছে জামায়াত

Link Copied!

মোঃ মোকাররম হোসাইন কালাই(জয়পুরহাট)প্রতিনিধি

আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রোডম্যাপ ঘোষণার পর থেকে জয়পুরহাট ২ আসনে নির্বাচনের আমেজ বইতে শুরু করেছে। এর মধ্যে জয়পুরহাট ২ আসনটি (কালাই,ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) উপজেলা নিয়ে সংসদীয় আসন গঠিত। বিএনপির দলীয় ছয়জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর পাশাপাশি মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছে জামায়াত। জয়পুরহাট ২ আসনে সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এলাকায় গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ, শোডাউন  ও সভা-সমাবেশ করছেন।আসনটি ঘিরে জামায়াত এককভাবে শক্ত অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বিষয়টি আরও জটিল করে তুলেছে। একই সাথে জামায়াতও সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া থেকে মাঠ পর্যায় সর্বত্র সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে।  এ আসনে পুরুষ ভোটারের চেয়ে মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি।

 

জানা গেছে, একসময় জয়পুরহাট বিএনপির দূর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল।আর জয়পুরহাট-২ আসনটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র হাতে ছিল ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত । তবে ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের কারণে এই আসন হারায়। এরপর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (আ.লীগ) এই আসনে দখল করে।  বিএনপি “আসন পুনরুদ্ধার” করতে মরিয়া অবস্থায় আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দল তাদের নিজস্ব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই আসনে তারা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে বলে সংবাদ রয়েছে।

 

বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা আবারও নির্বাচনী জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বুয়েট থেকে প্রকৌশল ডিগ্রি অর্জন করে পেশাগত সফলতার পাশাপাশি সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এলাকায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। স্থানীয় সড়ক নির্মাণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কার ও আধুনিকায়ন,স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ সবক্ষেত্রেই তাঁর অবদান মনে রেখেছেন অনেক ভোটার। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক তাঁকে নির্বাচনে অন্যতম সম্ভাব্য শক্ত প্রার্থী করে তুলেছে। তাঁর ভাষায়, আমি দায়িত্ব পালন করেছি, শুধু প্রতিশ্রুতি দিইনি। মানুষের পাশে ছিলাম এবং থাকব।

 

অপরদিকে রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এএইচএম ওবায়দুর রহমান চন্দন ১৪ বছর ধরে সংগঠনের শৃঙ্খলা ও কার্যক্রমে সক্রিয়  থেকেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা এবং কর্মীবান্ধব মনোভাব তাঁকে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় করে তুলেছে। যা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে দলের ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে নেতাকর্মীদের মাধ্যমে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন,রাজনীতিকে আমি চেয়েছি জনগণের অধিকার আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে।

 

অন্যদিকে, এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন সাবেক সচিব আব্দুল বারী।  তিনি রাজনীতিতে এসেছেন দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা, সততা ও জনসেবার মনোভাব নিয়ে। ২১ জুলাই ২০২৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে পা রাখার পর থেকেই তাঁর প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে অতীতে প্রশাসনে তিনি যে দক্ষতা ও নিরপেক্ষতা দেখিয়েছেন, তা তাঁকে রাজনীতিতেও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে।তিনি মনে করেন, রাজনীতিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দরকার অভিজ্ঞতা ও স্বচ্ছতা,আমি সেটিই আনতে চাই। অনেকেই মনে করছেন,দলীয় কোন্দল নিরসনে তাঁর মতো পরিশীলিত,নীতিনিষ্ঠ ও অভিজ্ঞ একজন প্রার্থী হলে জয়পুরহাট-২ আসনে এর রাজনীতিতে একটি গুণগত পরিবর্তন আসতে পারে।

 

জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক লায়ন সিরাজুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচিতেই নয়, কৃষি সংকট, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং কৃষকদের অধিকার নিয়ে নানা পর্যায়ে কাজ করছেন। তাঁর নেতৃত্বে স্থানীয় জনপদে আলোচনা সভা এবং জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি মানুষকে আন্দোলিত করেছে। তিনি বলেন, আমি শুধু রাজনীতির জন্য রাজনীতি করি না, আমি মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইকে রাজনীতিতে রূপ দিতে চাই।

 

বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ও প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর ইসলাম এক ভিন্নধর্মী প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছেন আলোচনায়। তিনি ২০২৫ সালে সিআইপি (এনআরবি) সম্মাননা অর্জন করেন সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রদানকারী হিসেবে। বিদেশে অবস্থান করেও এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবিক সহায়তায় অবদান রেখে মানুষের আস্থাভাজন হয়েছেন। তরুণ ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রজন্মের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়ছে।তিনি মনে করেন, দেশকে উন্নত করতে হলে প্রবাসের অভিজ্ঞতা ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির সংমিশ্রণ দরকার।আমি তা-ই দিতে চাই আমার এলাকার মানুষের জন্য।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও  আব্বাস আলী আওয়ামীলীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে ১৭ বছরের অধিক সময় সক্রিয় থেকে দলীয় কর্মীদের মাঝে আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছেন। অভিজ্ঞতা, ত্যাগ এবং নেতৃত্বের স্পষ্টতা তাঁকে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে একজন শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাঁর ভাষায়,আমি লড়াই করেছি,লড়াই করে জায়গা করে নিতে জানি। প্রতিশ্রুতির রাজনীতি নয়, আমি করি সাহসের রাজনীতি।

 

অন্যদিকে, জামায়াতের দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে এস.এম রাশেদুল আলম সবুজ মরিয়া হয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর জয়পুরহাট জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইসঙ্গে তিনি জেলা শাখার সংগঠন-পরিকল্পনা ও যুব বিভাগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও রয়েছেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং পরবর্তীতে জেলা সভাপতি হিসেবে যুগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার রাজনৈতিক মেধা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা এবং সেবামূলক মনোভাব দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী এবং নৈতিক শিক্ষার বিস্তারে তার ভূমিকা প্রশংসনীয় বলে মত প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তিনি বলেছেন, আমি রাজনীতি করি জনগণের অধিকার, ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার জন্য। আমার প্রার্থিতা দল নয়, আদর্শের প্রতিনিধিত্ব।

 

এদিকে বর্তমানে জামায়াতের ঐক্যবদ্ধতায় দলটি এমনভাবে সংগঠিত হয়েছে যা বিএনপির জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। বিএনপি যদি শেষ মুহূর্তে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানো না পারে তাহলে এবারও আসটি হাতছাড়া  হতেপারে । বিশ্লেষকদের মতে, একটি যোগ্য, গ্রহণযোগ্য, জনসম্পৃক্ত ও গ্রুপিংবিহীন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে পারলে বিএনপির সামনে আবারও জয়পুরহাট-২ পুনর্দখলের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতে পারে। অন্যথায়, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনী ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিতে পারে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।