যশোর প্রতিনিধি
যশোরে বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানির রিটেলাররা সিমের মালিকানা পরিবর্তনের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন—এমন অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে কিছু রিটেলার মনগড়া খাত তৈরি করে ইচ্ছেমতো অর্থ দাবি করছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে যশোর শহরের চিত্রামোড়, দড়াটানা, গাড়িখানা, মনিহার, চৌরাস্তা ও জেলখানা মোড় এলাকার বিভিন্ন রিটেলার পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, একেক কোম্পানির রিটেলার একেক রকম টাকা নিচ্ছেন।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে একজনের নামে ১০টির বেশি সিম থাকলে অতিরিক্ত সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করেই রিটেলারদের ‘টাকা বাণিজ্য’ বেড়েছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
রবি ও এয়ারটেল রিটেলাররা সাধারণত ৫০ থেকে ১০০ টাকা নিচ্ছেন, গ্রামীণফোন রিটেলাররা ১৫০ টাকা দাবি করছেন, আর বাংলালিংক রিটেলাররা নিচ্ছেন ৩৫০ টাকা—তবে সেই টাকা পরে সিমে রিচার্জ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়। কেউ কেউ আবার টাকা না দিলে মালিকানা পরিবর্তন করতে অস্বীকৃতি জানান।
ফয়সল ইসলাম নামে এক গ্রাহক বলেন, “আমার নামে ১০টির বেশি সিম থাকায় স্ত্রীর নামে কিছু সিম ট্রান্সফার করতে গেলে বিভিন্ন রিটেলার ভিন্ন ভিন্ন টাকা দাবি করেন। অনেকে মনগড়া অজুহাত দেখিয়ে বাড়তি টাকা চেয়েছেন। শেষে বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়েই মালিকানা পরিবর্তন করতে হয়েছে।”
তবে, সরেজমিনে দেখা গেছে—কিছু কাস্টমার কেয়ার সেন্টার বিনামূল্যে মালিকানা পরিবর্তন করছে। যেমন রবি ও এয়ারটেল কাস্টমার কেয়ারে (চিত্রামোড়) কোনো ফি নেওয়া হচ্ছে না।
অন্যদিকে, গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ার (রেলরোড, যশোর) থেকে জানানো হয়েছে, হেড অফিসের নির্দেশ অনুযায়ী ১১৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ইনচার্জ বলেন, “আমরা নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত নিচ্ছি না। বাইরে কেউ বেশি নিলে আমরা দায়ী নই।”
বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ার (এমকে রোড) সূত্রে জানা গেছে, তারা ৩৫০ টাকা নিচ্ছে—তবে সেটি গ্রাহকের সিমে রিচার্জ করে দেওয়া হয়।
তিন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “রিটেলার পয়েন্টগুলো সরাসরি কোম্পানির ডিলারদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তাই সেখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণ সীমিত।”
এ বিষয়ে জানতে বাংলালিংক কোম্পানির কর্পোরেট কমিউনিকেশন হেড গাজী তৌহিদ আহম্মেদকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি ইমেইলে পাঠান, আমি উত্তর দেব।” তবে পরবর্তীতে তিনি আর কোনো উত্তর দেননি।
বিটিআরসি’র কাস্টমার সার্ভিস নাম্বার ১০০-তে যোগাযোগ করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হোসেন জানান, “সিম মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিটিআরসি কোনো নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করেনি। কেউ যদি অতিরিক্ত টাকা আদায় করে, গ্রাহক আমাদের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। যাচাই-বাছাই শেষে আমরা ব্যবস্থা নেব।”

 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
								                                                                                     
                                    
 
                                 
                                 
                                 
                                