রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, দেশের সাধারণ মানুষ নির্বাচনের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। তারা নির্বাচন নিয়ে উজ্জীবিত। সবার সহযোগিতায় এবার একটি সুষ্ঠু ও সফল নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এবারের নির্বাচনকে অতীতের সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রেখে পরিচালনার জন্য পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) খুলনা পুলিশ লাইনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন আইজিপি।
তিনি বলেন, “বিগত তিনটি নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু এবার স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে সেই অতীতের কলঙ্কমুক্ত হতে চাই। নির্বাচন যেন নিরপেক্ষ হয়—এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
আইজিপি জানান, এবার প্রথমবারের মতো পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুলনায় আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন ইউনিটের প্রশিক্ষণ শিবির পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর তদন্ত খুব বেশি অগ্রগতি না হলেও ১৯টি হত্যা ও ৩৭টি অন্যান্য মামলায় ইতোমধ্যে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আরও ৩০ থেকে ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
মিথ্যা মামলার বিষয়ে আইজিপি বলেন, “৫ আগস্টের পরে কেউ মিথ্যা মামলায় জড়িত হলে ১৭৩ ধারার মাধ্যমে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। থানা পর্যায় থেকে আদালতে এ বিষয়ে সুপারিশ পাঠানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ডিএমপিকে দুই সহস্রাধিক ব্যক্তিকে হয়রানি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
প্রেস ব্রিফিংয়ে আইজিপি আরও বলেন, বর্তমান সরকার একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। এজন্য পুলিশের দায়িত্ব আরও বেড়েছে। তিনি জানান, এবার স্ব-উদ্যোগে প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে বিগত দিনের ভুলত্রুটি ঝেঁটে ফেলে সু-শৃঙ্খল নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। তবে যেসব পুলিশ সদস্য এখনও সংশোধিত হননি বা হতে পারবেন না, তাদের নির্বাচন-কেন্দ্রিক মূল নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হবে না। বিতর্কিতদের চিহ্নিত করার জন্য রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা রয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে দায়িত্ব বণ্টনের সময় বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে।
আইজিপি বলেন, “মানুষ নির্বাচনের জন্য উদগ্রিব হয়ে আছে। তবে পুলিশের একার পক্ষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাই সবার সহযোগিতা নিয়েই শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে।”
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য ও বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ফেইক নিউজ মোকাবিলায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। স্বাধীনতার নামে কে কী পরিমাণে লিখতে বা প্রকাশ করতে পারবেন—এ বিষয়েও ভবিষ্যতে নীতিমালা স্পষ্ট করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল হক, খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

