নওগাঁ প্রতিনিধি
নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। নতুন ধান কাটা আর সেই ধানের প্রথম অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় নবান্ন উৎসব।
নবান্ন উৎসবকে ঘিরে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন ধানের মিষ্টি ঘ্রাণ। বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যের এই উৎসব ঘিরে সর্বত্র বিরাজ করছে আনন্দ, উচ্ছ্বাস এবং নতুন ধারার প্রাণচাঞ্চল্য।
আর এ নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে নওগাঁয় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী প্যারিমোহন গ্রন্থাগার মিলনায়তনে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ এর আয়োজন করে।
নবান্ন উৎসবে আমনের নতুন ধানের চালের তৈরি পায়েস, খাগড়াই ও বাতাসা এবং মুড়ি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয় অতিথিদের। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে লালন, রবীন্দ্র, দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গান পরিবেশিত হয়।
আয়োজকরা জানান- বাঙালির পুরোন ঐতিহ্য সংস্কৃতি নতুন ধানের চালের পায়েস খাওয়ার প্রথা বিলিন হয়ে যাওয়ার পথে। যারা নতুন প্রজন্ম তাদের জানান দিতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। নতুন চালের তৈরি পায়েশ- পোলাও, পিঠা-পুলিসহ রকমারি খাদ্য পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানাটাও যেন আনন্দের। পাশাপাশি পালন করা হয় সামাজিকভাবে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী নানা আচার-অনুষ্ঠান।
দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। চারিদিকে সোনালী রঙের আমন ধানের মৌ মৌ গন্ধ। হেমন্ত এলেই বাংলার দিগন্তজোড়া প্রকৃতিতে ছেয়ে যায়। অবারিত প্রান্তরে শস্যের দোলা হাসি ফোটায় কৃষকের মুখে। আর নতুন ধানে নবান্ন তো কৃষকের জন্য এক আনন্দের উৎসব। নতুন ফসল ঘরে উঠাতে বাংলার কৃষকরা কাটা মাড়াইয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে।
শরতের বিদায় হতে না হতেই হেমন্তকে পাশ কাটিয়ে যেন আগাম বার্তা দিচ্ছে শীত। ফসলের খেতসহ শিশিরে ভেজা ঘাস আর কুয়াশার চাদর জানান দিচ্ছে হেমন্ত এসেছে প্রকৃতিজুড়ে। প্রকৃতিতে অনুভূত হচ্ছে হালকা শীতের আমেজ। দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। নতুন ধান কাটা আর সেই ধানের প্রথম অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় নবান্ন উৎসব। নতুন চালের তৈরি পায়েশ-পোলাও, পিঠা-পুলিসহ রকমারি খাদ্য পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানাটাও যেন আনন্দের। পাশাপাশি পালন করা হয় সামাজিকভাবে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী নানা আচার-অনুষ্ঠান।
শহরের বাসীন্দা শিক্ষার্থী মরিয়ম জান্নাত জানান- শহরের বসবাস করার সুবাদে গ্রামের অনেক আচার-অনুষ্ঠানের বিষয়ে অবগত না। কখন ধান-কাটা মাড়ায় হয়ে থাকে জানতেই পারিনা। এ অনুষ্ঠানে যোগদিতে এসে জানতে পারলাম নবান্ন মানে নতুন ধানের চাল থেকে ক্ষির-পায়েস সাথে বিভিন্ন মিষ্টান্ন। যা বাঙ্গালীর ঐতিহ্য।
সংগঠনের সহ-সভাপতি নাইচ পারভীন বলেন- নতুন চালের তৈরি পায়েশ-পোলাও, পিঠা-পুলিসহ রকমারি খাদ্য পাড়া-প্রতিবেশী,আত্মীয়-স্বজন সবাইকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানাটাও যেন আনন্দের। পাশাপাশি পালন করা হয় সামাজিকভাবে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী নানা আচার-অনুষ্ঠান। তবে এই ঐতিহ্য এখন হারানো পথে। সংস্কৃতি হারিয়ে যাওয়ায় সমাজে দ্বন্দ্ব ও হানাহানি বাড়ছে। আমাদের পুরোন সংস্কৃতি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারী বলেন, নবান্ন বাংলার আদি সংস্কৃতির একটি অংশ। আমরা যেন এ সংস্কৃতি ভুলে না যায়। আমরা এ শিকড়ের কথা নতুন প্রজন্মকে জানান দিতে চাই। নবান্ন একটি অসাম্প্রদায়িক এবং আবহমান কাল থেকে হয়ে আসছে। যা আমরা ধর্মবর্ন বিনিমিশেষে উদযাপন করি।

