ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শত শত মানুষের চোখে আজ শুধু দাবি নয়, ফুটে উঠেছে বেঁচে থাকার আকুল আবেদন। তারা কেউ বিলাসিতার জন্য নয়, বরং বংশপরম্পরায় চলে আসা তাদের একমাত্র রুটি-রুজির উৎস ‘জয়দিয়া বাওড়’ ফিরে পেতে রাজপথে নেমেছেন পেশা নয়, এটি প্রাণের টান।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে জয়দিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে অংশ নেন হালদার সম্প্রদায়ের অসংখ্য মানুষ। তাদের হাতে থাকা ব্যানার-ফেস্টুনে লেখা ছিল না কেবল প্রতিবাদের ভাষা, বরং ছিল শত শত পরিবারের টিকে থাকার আর্তি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সমিতির সভাপতি শ্রী শীতল হালদার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন
“আমরা এই বাওড়ের মাছ ধরেই যুগ যুগ ধরে বেঁচে আছি। কিন্তু আজ আমাদের বাদ দিয়ে অবৈধভাবে বাওড়টি ইজারা দেওয়া হয়েছে। আমাদের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
সাধারণ সম্পাদক রনজিদ হালদার ও শ্রী নীলকুমার হালদার অভিযোগ করেন যে, প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বঞ্চিত করে প্রভাবশালীদের হাতে বাওড়টি তুলে দেওয়া হয়েছে। এমনকি মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকার পরেও তা বাস্তবায়নে গড়িমসি করা হচ্ছে।
মানবিক সংকটের মুখে হালদার সম্প্রদায়
বাওড়টি হাতছাড়া হওয়ায় শত শত মৎস্যজীবী পরিবার এখন দিশেহারা। সন্তানদের পড়ালেখা আর পরিবারের দুবেলা খাবার জোগানোই এখন তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
উচ্চ আদালত মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দিলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ঝুলে আছে তাদের ভাগ্য।তাই হালদার সম্প্রদায়ের কাছে এই বাওড় কেবল জলাশয় নয়, এটি তাদের কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের অংশ।
বক্তারা প্রশাসনের প্রতি জোরালো দাবি জানান যেন দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে জয়দিয়া বাওড় প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় এবং বর্তমান অবৈধ মাছ আহরণ বন্ধ করা হয়। তারা বিশ্বাস করেন, প্রশাসন সংবেদনশীল হলে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে ফিরে আসবে তাদের হারানো স্বপ্ন।

