মোঃ জিহাদুল ইসলাম, কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধিঃ
প্রেমিকের আহ্বানে সাড়া দিতে গিয়ে নড়াইলের কালিয়ায় স্কুলছাত্রীকে দল বেঁধে ধর্ষনের ঘটনায় ফুসে উঠেছে কালিয়ার সর্বস্তরের মানুষ। ওই ঘটনার প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তশূলক শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছে সকল শ্রেনী ও পেশার মানুষ। আজ ৬ ফেব্রুয়ারী (শনিবার) কালিয়া পৌর শহরে নির্যাতিত ছাত্রীর নিজ বিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক সহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও কালিয়া প্যারিশংকর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পৃথক ভাবে মানববন্ধনসহ মৌন মিছিল করেছেন তারা। সকাল ১০ টায় কালিয়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকরা নিজ বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন পালন করেছে।
এরপর সকাল ১১ টায় কালিয়া প্যরিশংকর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকরা পৌর শহরে মৌন মিছিল করে ঘটনার প্রতিবাদসহ বিচার দাবি করেছে। ওইদিন দুপুর ১২ টায় কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে পৌর শহরের চৌরাস্তায় অনুষ্ঠিত হয়েছে মানববন্ধন । এ মানববন্ধন কালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ ঘোষ, কালিয়া পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মো.ওয়াহিদুজ্জামান হীরা, কালিয়া সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিএম শুকুর আলী, কালিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মশিউল হক মিটু, প্যারিশংকর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপ্তি রানী বৈরাগী, অধ্যাপক এরাদত হোসেন শিক্ষক অরুনকান্তি মল্লিক, মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রমূখ অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা একজন অবুঝ শিশুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ডেকে নিয়ে দল বেধে ধর্ষনের মত ঘটনা কালিয়ায় এই প্রথম। ওই ধরনের জঘন্য ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর স্বাভাবিক ভাষা নেই। তারা ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে বলেছেন, অন্য কেউ যাতে ওই ধরনের ঘটনার জন্ম দিতে না পারে সে জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনসহ পলাতক ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিসহ নির্যাতিত ছাত্রীর পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেছেন।
কালিয়া সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীর সাথে এই গ্রামের ইউছুফ শেখের ছেলে বখাটে মিশাণ শেখের কিছু দিন আগে থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুত্র ধরে ওইদিন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে প্রেমিক মিশান তাকে ফোন করে বাড়ীর পাশের মাঠের মধ্যে ডেকে নিয়ে মুখ বেধে কলাই ক্ষেতের মধ্যে দল বেঁধে পর্যায়ক্রমে ধর্ষন করে পলিয়ে যায় ধর্ষকরা। নরপশুদের পাশবিকতার শিকার স্কুল ছাত্রী নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নির্যাতিত ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে কালিযা থানায় ৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ প্রতারক প্রেমিক মিশানসহ এজাহার নামীয় দুই আসামীকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের আবেদনসহ নড়াইল আদালতে পাঠিয়েছে।
কালিয়া থানার ওসি শেখ কনি মিয়া বলেছেন, স্কুলছাত্রীকে গনধর্ষনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার নামীয় ২ জনকে প্রেপ্তার করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামীদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিমের চিরুনী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।