টুঙ্গিপাড়া প্রতিনিধিঃ
ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’র প্রভাবে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গত চারদিনের টানা বৃষ্টিতে বোরো মৌসুমে বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে উপজেলার ৫০০ হেক্টর জমির বোরো বীজতলা পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, চলতি বছর বোরো মৌসুমে ১৫০০ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা বীজতলা পাতিয়ে ছিল। কিন্তু ঘর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে ৫০০ হেক্টর জমির বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া শীতকালীন সবজি ২৫ হেক্টর, খেসারী ২০ হেক্টর, সরিষা ১৫ হেক্টর, মসুর ৫ হেক্টর, পিয়াজ ৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে উপজেলার কৃষকেরা। তবে প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সাহরুপ শেখ জানান, চলতি বোরো মৌসুমি ৩০ প্যাকেট ধানবীজ পাতিয়েছি। কিন্তু ঘর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা ৪ দিনের বৃষ্টিতে আমার সব বীজতলা পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি প্রতি বছর ১২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করে থাকি। এখন যদি বীজতলা/পাতো যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এবছর আমার আর ধান চাষ করা হবেনা।
পাটগাতী গ্রামের কৃষক গোবিন্দ মন্ডল বলেন, আমি এবছর ১০ বিঘা জমি চাষের জন্য ২৮ প্যাকেট ধানবীজ পাতিয়েছি। কেবল মাত্র এক সপ্তাহ বয়স হয়েছে পাতোর। ঘর্ণিঝড়ের কারণে টানা বৃষ্টিতে সব বীজতলা এখন পানির তলে। এমত অবস্থায় নতুন করে যে আবার বীজতলা পাতাবো তারও সময় নেই। এখন আমি খুব দুশ্চিন্তায় পড়েছি কিভাবে জমি চাষ করবো।
পূর্ব টুঙ্গিপাড়া গ্রামের কৃষক শাহাজান মোল্লা জানান, এবছর বোরো মৌসুমে ১৫ প্যাকেট ধানবীজ ও খেসারী বপন করেছিলাম কিন্তু বৃষ্টির কারণে সব এখন পানির নিচে। বীজতলা যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এবছর আর ধান লাগানো হবেনা। আবার বেশীর ভাগ জমি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করি। প্রতিবছর ধান বিক্রি করে ইজারার টাকা পরিশোধ করি সেটাকাও পরিশোধ করতে পারবোনা।আমি সরকারী ভাবে বীজ দেবার দাবী জানাই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা ৪ দিনের বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে। তবে এখন আবহাওয়া ভালো হলে খেত থেকে দ্রুত পানি সরে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমবে। এরপর ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হবে। কৃষকদের দ্রুত ক্ষেত থেকে পানি সরানো এবং এই মুহুর্তে নতুন করে বীজ না পাতানোর জন্য পরামর্শদেন তিনি। তিনি বলেন আমরা নতুন করে বীজ আনার চেষ্টা করছি। প্রাপ্তী সাপেক্ষে কৃষকদের নতুন করে বীজ সরবরাহ করা হবে।