মেজবা রহমান;স্টাফ রিপোর্টারঃ
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(বশেমুরবিপ্রবি) আজ বৃহস্পতিবার ১৫ ডিসেম্বর রোভার স্কাউট গ্রুপ এর পরিকল্পণা ও ব্যবস্থাপনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে “পরিচ্ছন্নতা সচেতনতা প্রকল্প” এর কার্যক্রম শুরু হল। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ৪ মাস। মেয়াদ পূর্তির পর প্রকল্পের কার্যক্রম বিশ্লেষন ও সফলতার হার নির্ণয় করা হবে।
মূখ্য বিষয় হলো এ প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত জিনিসপত্র ব্যবহার উপযোগী করা বা পুনঃ ব্যবহারের দিকে বিশেষ লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকল্পের প্রথম ধাপ “আত্ম সচেতনতা” কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা পরিত্যাক্ত হোয়াইট বোর্ড, আমদানিকৃত মেশিনের বক্স, ভেঙ্গে যাওয়া আসবাবপত্রের বোর্ড ও অব্যবহৃত কাঠ ও বাঁশের সাহায্যে পরিচ্ছন্নতা সচেতনতা মূলক প্লাকার্ড তৈরি করা হয় যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ন স্থান গুলোতে স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও অব্যবহৃত ডাস্টবিন গুলো সঠিক স্থানে বসানো ও পরিত্যাক্ত ড্রাম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়।
প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন রোভার গ্রুপের সম্পাদক ও সহকারী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ জনাব মোঃ মজনুর রশিদ, উডব্যাজার, আর. এস. এল. ড. মোছাঃ হালিমা খাতুন, সহকারী অধ্যাপক, পর্দাথবিজ্ঞান বিভাগ, আর. এস. এল. জুবায়দুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক ও সভাপতি, অর্থনীতি বিভাগ, আর. এস. এল. আতিয়ার রসূল হিমেল, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ রোভার গ্রুপের সিনিয়র রোভার মেট, রোভার মেট ও রোভার সদস্যরা।
প্রকল্প পরিকল্পণাঃ প্রকল্পটি ৪টি ধাপে ভাগ করা হয়েছে।
১. আত্ম সচেতনতা(প্লাকার্ড স্থাপন ও পরিত্যাক্ত বিন বা অব্যবহৃত জিনিসপত্র দিয়ে ডাস্টবিন স্থাপন)
স্লোগানঃ প্রয়োজনে আমার ব্যাগ/পকেট হতে পারে,ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখার সিন্দুক।
২. ব্যবস্থাপনা(প্রয়োজনীয় স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন)
স্লোগানঃ সচেতন হই, সচেতন করি;
ময়লা ফেলার বিন ব্যবহার করি।
৩. সচেতনতা (সচেতনতামূলক গান, ছড়া, পথনাটক ও ক্যাম্পেইন)
স্লোগানঃ আজ আমি সচেতন হই,
আগামীকাল সকলে সচেতন হবে।
৪. পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন (সচেতন করা ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণ ও তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা)
স্লোগানঃ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন রাখা;
আমার আপনার সকলের দায়িত্ব।
প্রকল্প হাতে নেওয়ার কারণঃ দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীসহ সকলের মাঝে একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে অসচেতনতা পরিলক্ষিত হয়ে আসছে । এই অচেতনতাদূর করা এবং তার ফলপ্রসূ উন্নয়ন যেন দীর্ঘমেয়াদী প্রতিফলিত হয় এ বিষয়কেই মাথায় রেখেই বশেমুরবিপ্রবি রোভার স্কাউট গ্রুপ এই প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে।
প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ ব্যক্তি সৃষ্ট আবর্জনা বা অপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্র যেখানে সেখানে না ফেলার সুস্থ ও সুন্দর অভ্যাস শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের মাঝে প্রচলন ঘটানো যা ভবিষ্যতে সমাজ ও দেশকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সহায়তা করবে।
প্রকল্প সম্পর্কিত বক্তব্যঃ
রোভার গ্রুপের সম্পাদক জনাব মোঃ মজনুর রশিদ বলেন, “এমন সচেতনতামূলক একটি প্রকল্প রোভার স্কাউট কর্তৃক বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে দেখে ভালো লাগছে। সচেতন থেকে স্বনির্ভরভাবে নিজেদের পরিচ্ছনতার কাজগুলো করতে পারাটা আত্ম উন্নয়নের বড় অর্জন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উক্ত কর্মকান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান থাকলে আমারা সকলেই সচেতন থাকার চেষ্টা করতে পারবো যা এই ক্যাম্পাসকে পরিচ্ছন্ন রাখতে বড় ভূমিকা পালন করবে। রোভার সেবামূলক এমন ছোট ছোট প্রকল্পই পারে আমাদের দৈনন্দিন অসচেতনাতাকে দূর করে সচেতন করে তুলতে।”
”পরিচ্ছন্নতা সচেতনতা প্রকল্প” সমন্বয়ক রোভার মেট ফুয়াদ হাসান বাঁধন বলেন, “ময়লা আবর্জনা হল আমাদেরই সৃষ্ট একটা বড় সমস্যা। এই ক্যাম্পাসটা আমাদেরই। তাই আমাদের উচিত এই ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখা এবং একজন রোভার সদস্য হিসেবে আমাদের উচিত হবে এই দায়িত্ব সকলে যেন সুনির্দিষ্টভাবে পালন করে সেদিকে লক্ষ্য রাখা।
আমরা আমাদের ক্যাম্পাস পরিষ্কার রাখবো কিছু নির্দিষ্ট লক্ষকে সামনে রেখে।
আমরা সকলে সচেতন হলে তবেই আমাদের দ্বারা সৃষ্ট ময়লা আবর্জনা নিরসন হবে বলে আমি মনে করি।”
সিনিয়র রোভার মেট সাকিব হোসেন হৃদয় বলেন, ”প্রকল্পটি শুরু হয়েছে মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্দেশ্যে। এ প্রকল্প সহ আগামী প্রকল্প গুলোতেও অব্যবহিত ও পরিত্যক্ত জিনিসপত্র পুনঃ ব্যবহারের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।”
নতুন রোভার সদস্য তাওহীদ মোড়ল বলেন, ” ‘পরিছন্নতা সচেতনতা প্রকল্প’ কার্যক্রম এর সাথে যুক্ত হতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হলো ঈমানের অঙ্গ। আমাদের ক্যাম্পাস এ আমরা অনেকে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে থাকি। এতে করে আমাদের ক্যাম্পাস দেখতে অসুন্দর লাগে। তবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারব বলে আশা করছি। এর ফলে মানুষ নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলবে এবং আমাদের ক্যাম্পাস দেখতে অনেক বেশি সুন্দর লাগবে।”
সর্বোপরি এ প্রকল্পের মেয়াদকাল শেষে আমরা পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস পাবো এটাই সকল রোভার সদস্যদের প্রত্যাশা।