মোঃ জিহাদুল ইসলাম,  নড়াইলঃ

নড়াইলে ভগ্নিপতি কুদ্দুস ফকিরের হাতে শ্যালক রুকু শেখ হত্যার প্রায় এক মাস হলেও আটক হয়নি মূল আসামী কুদ্দুস ফকির। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের মূল আসামী এখনো আটক না হওয়ায় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের মধ্যে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ।

গত বছর (৬ ডিসেম্বর/২০২১) লোহার শাবলের আঘাতে আহত রুকু শেখের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। ওই দিন রাতেই নিহতের স্ত্রী মোসাঃ মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে হত্যাকান্ডের মূল হোতা কুদ্দুস ফকিরকে আসামী করে নড়াগাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ০২। মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদীর ননদ চায়না বেগমের সাথে আনুমানিক ৩০ বছর পূর্বে আসামী কুদ্দুস ফকিরের ইসলামি শরিয়ত মতে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলতে থাকায় কুদ্দুস প্রায়ই কারণে অকারণে চায়নাকে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করত। এক পর্যায়ে প্রায় ০৩ বছর পূর্বে চায়না বেগম স্বামীর সংসার ত্যাগ করে চলে আসে। রুকু শেখ নিহত হওয়ার মাস খানিক পূর্ব থেকে কুদ্দুস ফকির চায়নাকে পুনরায় সংসারে ফেরত নেওয়ার জন্য বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে কুদ্দুস ফকিরের বড় ছেলে রফিকুলের বাড়িতে শালিস হয়। ওই শালিসে আলোচনার এক পর্যায়ে কুদ্দুস ফকিরের বোন (বোম্বে ফেরত) রাফিজা বেগমের সাথে নিহত রুকু শেখের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে আসামী কুদ্দুস ফকির সেখানে হাজির হয়ে চায়নাকে আবার সংসারে ফেরত পাঠাতে বললে রুকু শেখ বলে, তুমি বার বার আমার বোনকে নিয়ে নির্যাতন কর, তাই তোমাকে গ্রামের মুরব্বিদের সামনে নির্যাতন করবনো মর্মে ষ্ট্যাাম্পে মুচলেকা দিতে হবে। এতে আসামী কুদ্দুস ফকির ক্ষীপ্ত হয়ে বলে ‘‘তোকে ষ্ট্যাম্প দেয়াচ্ছি’’ বলে শালিস অমিমাংসীত রেখে চলে যায় এবং পরের দিন ৩ ডিসেম্বর সকালে রুকু শেখকে নদীর কুলে ডেকে নিয়ে লোহার শাবল দিয়ে মাথায় উপর্যপুরী আঘাত করে হত্যা করে।

নিহত রুকু শেখের সন্তানেরা আবেগাল্পুত হয়ে বলেন, আমরা এলাকায় থাকিনা। তবে আমাদের ধারনা ষড়যন্ত্রের শিকারে আমার পিতা খুন হয়েছে। আমার বাবার হত্যাকারীর ফাঁসি চাই এবং তদন্ত সাপেক্ষে এই হত্যার পেছনে যদি কারো ইন্ধন থাকে তাদেরকেও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, এটা একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। এর পেছনে একাধীক ব্যক্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তারা। এছাড়া এলাকাবাসী সাংবাদিকদেরও এই ঘটনার রহস্য উন্মোচনের জন্য বিশেষ অনুরোধ করেন। ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। যা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

নড়াগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রোকসানা খাতুন নবধারা কে বলেন, সোর্সের মাধ্যমে আসামী কুদ্দুস ফকিরের অবস্থান জানাসহ গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।