1. nabadhara@gmail.com : Nabadhara : Nabadhara ADMIN
  2. bayzidnews@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  3. bayzid.bd255@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  4. mehadi.news@gmail.com : MEHADI HASAN : MEHADI HASAN
  5. jmitsolution24@gmail.com : support :
  6. mejbasupto@gmail.com : Mejba Rahman : Mejba Rahman
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০২:২৯ অপরাহ্ন

কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী ও সুরকার শাহ-আবদুল করিমের জন্মবার্ষিকী আজ

Reporter Name
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৭৮৭ জন নিউজটি পড়েছেন।

নবধারা ডেস্কঃ

আবদুল করিম হচ্ছেন একজন কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার,গীতিকার ও সঙ্গীত শিক্ষক।তিনি বাউল সঙ্গীতকে অনন্য উচ্চাতায় নিয়ে গেছেন। বাংলা সঙ্গীতে তাকে”বাউল সম্রাট”হিসাবে সম্বোধন করা হয়। কালজয়ী বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের জন্ম ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে তথা ১৫-ই ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামের হতদরিদ্র গৃহস্থ পরিবারে।

গ্রামের অন্যদশটা পরিবারের মতো ছিল না তার পরিবার। সংসারের অভাব-অনটন, নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থার মধ্যে বেড়ে ওঠেন করিম। পিতা ইব্রাহিম আলী ছিলেন কৃষক আর মাতা নাইওরজান বিবি ছিলেন সাদামাটা গ্রাম্য বধূ। ইব্রাহিম আলীর ছয় সন্তানের মধ্যে করিম ছিলেন একমাত্র ছেলে,বাকি পাঁচজন মেয়ে। উজানধল গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কালনী নদী। শেষ বিকেল অথবা ভরদুপুরে কালনীর তীরে বসে করিম রচনা করেছেন অসংখ্য বাউলগান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য— “বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে…।” “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম…।” “গাড়ি চলে না…।” “আমি কূলহারা কলঙ্কিনী…।” “কেমনে ভুলিবো আমি বাঁচি না তারে ছাড়া…।” “কোন মেস্তরি নাও বানাইছে…।” “কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু…।” “বসন্ত বাতাসে সইগো…।” “আইলায় না আইলায় নারে বন্ধু…।” “মহাজনে বানাইয়াছে ময়ুরপংখী নাও…।” “আমি তোমার কলের গাড়ি…।” “সখী কুঞ্জ সাজাও গো…।” “জিজ্ঞাস করি তোমার কাছে…।” “মানুষ হয়ে তালাশ করলে…।” “আমি বাংলা মায়ের ছেলে…।” “রঙ এর দুনিয়া তরে চায় না…।” সাংসারিক টানাপোড়েনে শৈশবে অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থের বাড়িতে রাখালের কাজ করেছেন করিম। মাঠে গরু রাখার কাজ করে কেটে যায় তার কিশোর জীবন।

সারা দিন গরু চরিয়ে বাড়ি ফিরতেন গোধূলীতে।মাঠে গরু চরানোর সময় তিনি আপন মনে গান গাইতেন।প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে গান তার একটি নিত্য অনুষঙ্গ। তীব্র অভাবের তাড়নায় প্রচলিত পুঁথিগত শিক্ষা গ্রহণ করা হয়নি তার।তিনি জীবনে মাত্র আট দিন বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। প্রকৃতি ছিল তার প্রথম শিক্ষক। প্রকৃতিই তাকে নিখাদ সোনা করে গড়ে তুলেছে। পার্থিব জীবনের প্রায় দুই যুগ ধরে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা গ্রহণ করেনি।এরপর তিনি ভর্তি হন নাইট স্কুলে।স্বাক্ষরজ্ঞান লাভের পর তিনি তার সহপাঠীদের নিয়ে গাজীর গান,বাউলা গান,ঘাটু গান,পালাগান,সারিগান, মালজোড় গান,কবিগানসহ বিভিন্ন অতি প্রাকৃতজনের গান গাইতেন।সে সময় ভাটি অঞ্চলের হাওরে নাও বাইছ (নৌকা বাইছ)হতো তখন করিম তার সহপাঠীদের নিয়ে নাওয়ে উঠে গাইতেন ‘কোন মেস্তুরী নাও বানাইছে কেমন দেখা যায় ঝিল-মিল-ঝিল-মিল করেরে ময়ূরপঙ্খী নাও।এভাবে গানের মধ্য দিয়ে চলে তার বাউলগান চর্চা।বৃহত্তর ভাটি বাংলার সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে মালজোড় গান খুব জনপ্রিয়তা লাভ করে। মানব প্রেমের মধ্য দিয়ে জগৎ সংসারকে আলোকিত আর সমাজের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তির স্বাদ দিতে প্রাণান্ত চেষ্টা করেছেন।আবদুল করিমের গানে সাম্যবাদী ধারার সুর ফুটে উঠেছে।নির্যাতিত মানুষের শোকগাথা, শোষণ-বঞ্চনা অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ,শাসিত ও শোষক গোষ্ঠীর কথাই বেশি রয়েছে।

২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান এই কিংবদন্তি বাউল। দিরাইয়ের বাউল আবদুল করিম, নেত্রকোনার খ্যাতনামা বাউল উকিল মুন্সীসহ অসংখ্য খ্যাতনামা বাউলগণ নবীজীর জীবনী,পৌরাণিক যুগের কৃষ্ণের জীবনী,রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা,প্রেম-বিচ্ছেদ,মাটি ও মানুষের গান গেয়ে ভাটি অঞ্চলে সারা জাগিয়ে ছিলেন।শাহ আবদুল করিমের রচিত বাউল, মুর্শিদি,জারিসারি, ভাটিয়ালি প্রভৃতি গান লোকমুখে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে।শুধু কালির লেখায় আলিম হয় না মন রে কানা অজানা কে যে না জানে,আল্লাহ নবী আদম ছবি এক সূতে বাঁধা তিন জনে’তার রচিত এ গানটির মধ্য দিয়ে আধ্যাত্মিক যোগ সাধনার একটি ধারণা পাওয়া যায়। বাউল করিমের প্রথম গানের বই ‘আফতাব সঙ্গীত’পঞ্চাশ দশকের গোড়ার দিকে প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় বই গণসংগীত প্রকাশিত হয় ১৯৫৪ সালে। তৃতীয় বই ‘কালনীর ঢেউ’১৯৮১ সালে প্রকাশিত হয়।১৫৪ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটিতে মোট ১৬৩টি গান রয়েছে। প্রতিটি গানেই জগৎ ও জীবন সম্পর্কে লেখকের আত্ম প্রতীতির স্বাক্ষর বিদ্যমান, যা সহজেই সহৃদয় পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। চতুর্থ বই ধলমেলা প্রকাশিত হয় ১৯৯০ সালে।পঞ্চম বই ‘ভাটির চিঠি’ প্রকাশ হয় ১৯৯৮ সালে। স্বল্পশিক্ষিত বাউল শাহ আব্দুল করিম প্রায় দেড় সহস্রাধিক গান লিখেন এবং সুরারোপ করেন।

বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে তাঁর ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে।শিল্পীর চাওয়া অনুযায়ী সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের উদ্যোগে বাউল আব্দুল করিমের সমগ্র সৃষ্টিকর্ম নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত কিশোর বয়স থেকে গান লিখলেও কয়েক বছর আগেও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল।সাম্প্রতিককালে এ সময়ের বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন।

তিনি বাংলা সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০০১ সালে একুশে পদক পুরস্কারে ভূষিত হন। তার পূর্বে ২০০০ সালে কথাসাহিত্যিক আবদুর রউফ চৌধুরি পদক লাভ করেন। দ্বিতীয় সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে এই বাউল সম্রাটকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved সর্বস্বত্বঃ দেশ হাসান
Design & Developed By : JM IT SOLUTION