“চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণ” এ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পুলিশ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার এবং খুলনা অঞ্চালের প্রধান (ডিএস), সহকারী প্রধান (ডিএফ), ঠেকরাবাদ (সিডিএসপি) ম্যানেজার এবং প্রতিষ্ঠানের আরো একাধিক কর্মকর্তার বিভিন্ন দূর্নীতি এবং অপকর্ম ধামা চাপা দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটির কতিপয় কর্মকর্তা অপচেষ্ঠা ও মিথ্যাচার করছে।
গত ২০ জুন ২০২২ “বাংলাদেশ ন্যাজ্যারীণ মিশন” খুলনা আঞ্চলিক প্রধান কার্যালয় হতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও গাজা উদ্ধার শিরোনামে নবধারা পত্রিকায় “চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণ এর খুলনা দক্ষিন আঞ্চলিক প্রধান এবং ন্যাজ্যারীণ মিশন বাংলাদেশের বোর্ড সম্পাদক রেভারেন্ট অঞ্জন মোশি বোস এর স্বীকারোক্তি এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণের পক্ষ হতে কোনরূপ উত্তর না চেয়ে সংবাদ টি কে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার বলে চালিয়ে দেওয়ার প্রবনতা রীতিমতো প্রতিষ্ঠানটির দূর্নীতি এবং আইন বিরোধী কাজের পক্ষে সমর্থন করে বলে প্রমাণিত হয়। নবধারা সব সময় যে কোন সংবাদের যথার্থ প্রমাণ, জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতায় বদ্ধপরিকর।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ প্রধান স্টিভ কস্তা বলেন “আমরা কোন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যকে মিথ্যাচার বা অপপ্রচার বলি নাই, আমরা বলতে চেয়েছি চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণ কোন প্রকার আইন বিরোধী এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না।”
ফাইন্যান্স ম্যানেজার রুবেন হীরা বলেন, প্রত্রিকার প্রকাশিত নিউজ কে মিথ্যা বা অপপ্রচার বলার বিষয়ে আমাদের কোন মতামত নাই। প্রেস ব্রিফিংয়ে আমরা বলেছি “চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণ কোন অপকর্ম কে সমর্থন করে না।”
তাদের এই মতামত এবং সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে যে অসামঞ্জস্য প্রতিয়মান হয় তা প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতাকে কলুশিত করে বলে। এমনকি প্রকাশিত সংবাদের সুস্পষ্ঠ কোন জবাব দিতে ব্যর্থ হয়ে বিষয়টাকে ধামাচাপা দেওয়ার কৌশল হিসেবে নিয়েছে।
সম্প্রতি “চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণ এর খুলনা অঞ্চলের হিসাব কর্মকর্তা সজল সরকার এর হিসাব নিরীক্ষায় ২৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর প্রমান পাওয়া গেছে এবং খুলনা আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। যা প্রতিষ্ঠানের দূর্নীতি এবং প্রতিষ্ঠানটির দ্বায়িত্বহীনতার প্রমান মেলে। প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মী নবধারা কে জানান স্টাফদের প্রধানকৃত দীর্ঘদিনের জমাকৃত দশমাংশ এর কোন হিসাব প্রতিষ্ঠান না দিয়ে ডিএসএ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
এছাড়াও চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণ এর ফাইন্যান্স ম্যানেজার রুবেন হীরা এর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের অডিও রেকর্ড ভাইরাল হবার বিষয়ে যানতে চাইলে ঐ শিশুর পিতা চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণের উপদেষ্ঠা মন্ডলির সদস্য ভানু খান বলেন, এটা আমাদের একান্ত পারিবারিক বিষয় এবং অফিস কর্মপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং এটা বিচারাধীন রয়েছে।
অন্যদিকে রুবেন হীরা বলেন, এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে ফাসানোর জন্য করা হয়েছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিচারাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, রুবেন হীরার নামে ২০২০ সালে গোপালগঞ্জে একটি নারী ধর্ষনের অভিযোগও রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ
অন্যদিকে “বাংলাদেশ ন্যাজ্যারীণ মিশন” খুলনা আঞ্চলিক প্রধান কার্যালয় হতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও গাজা উদ্ধারের বিষয়টি রেভারেন্ট অঞ্জন মোশি বোস স্বীকার করে বলেন, তার নিজের ব্যবহৃত টেবিলের ৩নং ড্রয়ার এবং রিচার্র্ড হালদার এর অফিস কক্ষের সোফার ভিতর হতে পুলিশ তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করেছে, যার চাবি সে নিজেই সংরক্ষণ করে।
তিনি অভিয়োগ করে বলেন, পুলিশিং কমিটির সদস্য মানু সাহেবের মধ্যস্থতায় পুলিশ ত্রিশ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ফাইন্যান্স অফিসার সজল সরকার, অফিস দারোয়ান সুবাস দাস কে বেধরক মারপিট করে ছেড়ে দিয়ে যায় এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে যায়।
অঞ্জন মোশি বোস জানান, পুলিশি অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন, রেভারেন্ট অঞ্জন মোশি বোস (ডিএস), রিচার্র্ড হালদার (ডিএফ), ম্যানেজার তাপস ঘরোজা, ফাইন্যান্স অফিসার সজল সরকার, অফিস দারোয়ান সুবাস দাস, ঠিকরাবাদ সিডিএসপি প্রজেক্ট ম্যনেজার জ্যাভিয়ার বিশ্বাষ, মোংলা উপজেলা প্রধান রেভারেন্ট টিটো গাইন, সিডিসি প্রধান মানুয়েল মজুমদার যাদের স্বীকারোক্তি ঘটনার সত্যতা প্রমান করে।
তিনি বলেন, ফাইন্যান্স অফিসার সজল সরকার, পুলিশের বেধরক মারপিটের কারণে হসপিটালে ভর্তি হয় এবং টিকিৎসা গ্রহণ করে।
তিনি অভিযোগ করেন, কেউ শত্রুতা করে এ কাজ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির অফিসে সিসি ক্যামেরা রয়েছে এবং সেখান হতে এ ঘটনার সত্যতা উৎঘাটন করা সম্ভব।
জানা যায়, ঢাকা ন্যাশনাল অফিস হতে সরেজমিনে তদন্ত করতে আশায় রিচার্র্ড হালদার (ডিএফ) এর রুমের সিসি ক্যামেরার বিগত দিনের সকল ফুটেজ ডিলিট করে দিয়েছে, যার যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ সে এবং (ডিএস) রেভারেন্ট অঞ্জন মোশি বোস করে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, রেভারেন্ট অঞ্জন মোশি বোস (ডিএস) বিভিন্ন অপকর্ম করার দায়ে সিলেটে গনরোশের স্বীকার হয় এবং সেখান হতে রংপুরে তাকে বদলি করা হয় এবং সেখানেও তার বিভিন্ন অর্থ কেলেংকারির কাজের অভিযোগ রয়েছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর হতে তাদের ডোপটেস্ট করার অনুরোধ করা হলেও আজ পর্যন্ত উল্লেখিত কর্মকর্তাবৃন্দ কোন রকম উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে নাই।
এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ প্রধান স্টিভ কস্তা বলেন, তার কর্মচারীদের আগ্রহ না থাকার কারণে বিসয়টি আমলে আনা সম্ভব হয় নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো এক কর্মকর্তা বলেন ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ বর্তমান ডিএস খুলনা আঞ্চলিক অফিসে যোগদান করার পর হতে ব্যপকভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম হতে অর্থ আত্মসাৎ, নেশা সহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রম করে আসছিল, ডিএস, ডি এফ এবং খুলনা সিডিএসপি এর ম্যনেজার জেভিয়ার বিশ্বাস। এই তিনজনই প্রতিষ্ঠানের বিশেষ পদে বহাল থাকার জন্য চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না।
প্রতিষ্ঠানটির প্রায়ই প্রতিটি কার্যক্রমে অনিয়ম, স্বার্থ কেন্দ্রিক কর্মচারি নিয়োগ, পারিবারিক এবং ব্যাক্তি পর্যায়ে আন্তরিকতার অভাব স্বয়ং খৃষ্ঠীয়ান মহলেও সমালোচিত, যদিও বাংলাদেশে খৃষ্ঠীয়ান প্রতিষ্ঠানগুলির উপর সকল সম্প্রদায়ের একটা আস্থা, ভালোবাসা এবং সহযোগীতা দৃশ্যমান।
এবিষয়ে খুলনা অঞ্চলের হিন্দু, খৃষ্ঠান ও বৌদ্ধ পরিষদের চেয়ারনম্যান বলেন, চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণের বিভিন্ন অপকর্মের কথা আমরাও শুনছি এবং খৃষ্ঠান সমাজের সম্মানার্থে প্রমানীত অপকর্মের সঠিক বিচার আমরা প্রত্যাশা করি। গুটিকয়েক স্বার্থান্বেষী মানুষের জন্য আমরা অপবাদের স্বীকার হতে চাই না।
এ ধনের নেক্করজনক ও কুরুচিপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঠিক বিচার সহ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আনার জন্য সরকারী প্রশাসন, দাতা প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি এবং এনজিও এ বি এর বিশেষ নজরদারী একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.