ব্যাকওয়াটার্স হিসেবে পরিচিত পাওয়া স্বরূপকাঠিতে পর্যটকদের আকর্ষন বাড়ছে দিনকে দিন।
দক্ষিনে বাংলার সুয়েজ খাল হিসেবে পরিচিত গাবখান চ্যানেল ও কচা নদী, উত্তরে সন্ধ্যা নদী ও নান্দুহার খাল, পশ্চিমে কালিগঙ্গা নদী ও বেলুয়া নদী,পূর্বে ঝালকাঠি জেলার সাথে আটঘর কুরিয়ানা পেয়ারা বাগানের সিমান্ত ছোটো ছোটো খাল নিয়ে গঠিত স্বরূপকাঠি উপজেলা।
৪১০টি ছোটো বড় খালের সমাহারে তৈরী হওয়া স্বরূপকাঠি উপজেলা প্রকৃতির এক অপরুপ সৃষ্টি।ব্যাক ওয়াটার্স এ উপজেলার প্রতিটি খালের রয়েছে আলাদা সৌন্দর্য এবং ভিন্ন রকমের বৈশিষ্ট্য। কালি বাড়ি, শিতলা, মাগুরা, নাপিতখালি, কাজলা, ডুবি কাটাখালি তারাবুনিয়া এরকম বাহারি নামের খালগুলোর সাথে তাদের সৌন্দর্য আপনার প্রকৃতি দেখার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিবে। খালের পার ধরে গড়ে ওঠা ৩১ টি ভাসমান বাজার আপনাকে ভিন্ন রকমের আনন্দ দিবে এটা নিশ্চিত।
শান্ত সুনিবিড় পরিবেশে নৌকায় করে যত সামনে আগাবেন ততই পাখির কলকাকলির সাথে বৈঠা ও পানির সম্পর্কে গড়ে ওঠা ছলাৎ ছলাৎ শব্দে আপনাকে বিমোহিত হতেই হবে। আর এমন সৌন্দর্য পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে সন্ধ্যা নদী থেকে সৃষ্ট্য ছোটো খালগুলোর ভিতরে নৌকা বা ট্রলার করে।
পানির উপরে খালের দুই পাড়ের সবুজ বৃক্ষের শিতল ছায়া আপনার মনে পরিশুদ্ধতা এনে দিবে অল্পক্ষনেই। আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারা বাগান সংলগ্ন ছোটো খাল সহ স্বরূপকাঠির প্রতিটা খালের মধ্যেই আপনি পাবেন সুন্দর বনের আবহ।
এছাড়াও স্বরূপকাঠিতে দেখতে পাবেনঃ
দেশিয় গোল কাঠের ব্যবসাঃ বেশির ভাগ খালের পার্শে গরে ওঠা দেশিয় কাঠের পষড়া দেখতে পাবেন সুটিয়াকাঠি, বলদিয়া সোহাগদল এবং স্বরূপকাঠি ইউপিতে।
ক্রিকেট ব্যাটের কারখানাঃ বলদিয়া ইউপির বিন্যা গ্রামে দেশিয় কাঠ দিয়ে তৈরী ক্রিকেট ব্যাটের কারখানা।টেনিস বল দিয়ে ক্রিকেট খেলার জন্য দেশে যত ব্যাটের প্রয়োজন হয় তার বেশিরভাগ এ গ্রামেই তৈরী হয়।
ইনডোর ক্রিকেট পিচঃ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড স্বরূপকাঠির সুটিয়াকাঠি গ্রাম থেকেই বানিয়ে নেয় ইনডোর ক্রিকেট পিচ। নারকেলের ছোবরা দিয়ে তৈরী হওয়া এ ক্রিকেট পিচ দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী হয় বিদেশে।
ভাসমান সবজি চারা উৎপাদনঃ ২০০ বছর ধরে ৭ থেকে ৮ ফিট পানির উপরে গগন গ্রামে কৃষক কৃষানীর ভাসমান সবজি চারা উৎপাদন।যা আপনার কপালে বিস্ময়ের ভাজ ফেলে দিবে।
পাপষ শিল্পঃ নারকেলের ছোবরা দিয়ে রশি ও পাপষ তৈরী হয় সুটিয়াকাঠি ও সারেংকাঠি ইউপিতে।মহিলাদের নিপুন হাতে নারকেলের ছোলা থেকে আশ, আশ থেকে রশি এবং রশি থেকে তৈরী পাপষ দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী হচ্ছে বিভিন্ন দেশে।
ফুলের বাগান ও নার্সারীঃ স্বরূপকাঠির ইউনিয়নে শত শত নার্সারী ও ফুলের বাগানে ফুলের সমারহ দেখে আপনার মন খুশিতে গেয়ে উঠবে একি অরুপ রুপে মা তোমার হেরিনু পল্লী জননী।
লবন শিল্প কারখানাঃ সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ে সারেংকাঠি ইউপিতে এবং বলদিয়া ইউপির ডুবিখালের পারে গড়ে ওঠা লবন শিল্প কারখানার সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষন করছে প্রতিনিয়ত।
এছাড়াও গুয়ারেখা ইউপির হাতে ভাজা মুড়ি ও বাশ ও ব্যাত শিল্প কারখানা,বলদিয়া ইউপিতে দেশিয় কাঠের নৌকা ও স্বল্পমুল্যের ফার্নিচার, সুটিয়াকাঠি ইউপিতে পিরোজপুর জেলার একমাত্র বিসিক শিল্প নগরীতে নারকেলের ছোবরা দিয়ে আশ বানানো, ফেলে দেয়া ঝুট থেকে নতুন রশিবানানো সহ বিভিন্ন মনকারা ফার্নিচার ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ববিন কারখানা দেখতে দেখতে কখন যে দিন চলে যাবে আপনি তা বুঝতেই পারবেন না।
শুক্র শনি হাতে দু দিন সময় নিয়ে চলে আসতে পারেন স্বরূপকাঠিতে।নিশ্চিত ছুটির এ দুদিন সন্ধ্যা নদীতে জেলেদের সাথে ইলিশ মাছ ধরে নদীর সৌন্দর্যে গোসল করে আপনি তৃপ্ত হবেনই।
রাতে থাকাঃ থাকার জন্য এখানে বিলাস বহুল কোনো আবাসিক না থাকলেও রয়েছে সিততাপ নিয়ন্ত্রীত সরকারি ডাকবাংলো।এছারা খুব অল্পমুল্যে থাকার ব্যবস্থা করে দিবে মাটি, সীমান্ত,প্রকৃতি সহ একাধিক ট্যুরিজম।
খরচঃ ঢাকার সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ি ও গাবতলি থেকে উঠতে পারেন স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ)এর যে কোনো বাসে। এছারা রাতে আসতে পারেন সদরঘাট থেকে স্বরূপকাঠির লঞ্চে।দুই দিনের এ ভ্রমনে যাওয়া আসা সহ ৪/৫ হাজার টাকায় দেখা হয়ে যাবে বৈচিত্রময় স্বরূপকাঠির নদী খাল ও জীবিকার সৌন্দর্য।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2024 Nabadhara. All rights reserved.