প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ২৯, ২০২৫, ১১:০১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ৮, ২০২৩, ৭:২৭ পি.এম
আজ বরেণ্যে রাজণীতিবিদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর জন্মদিন

১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের ঘোষিত ছয় দফা আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় স্থায়ীভাবে চলে আসেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
স্বামী ভাষাসৈনিক মরহুম গোলাম আকবর চৌধুরীসহ চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় আগমনের পর রাজপথ কাঁপানো আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগের সদস্য হওয়া সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
১৯৬৫ সালে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে প্রথম নারী নেত্রী হিসেবে সাজেদা চৌধুরীর তেজোদীপ্ত বক্তব্য এখনো মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।
নারী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় ১৯৬৯ সালে মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। পরের বছর ১৯৭০ সালে নির্বাচিত সাতজন মহিলা এমএনএর মধ্যে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ছিলেন অন্যতম। কলকাতার বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় এবং প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বিশেষ করে কলকাতায় ‘গোবরা নার্সিং ক্যাম্প’ স্থাপন করে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা প্রদানের কথা চিরস্মরণীয়। তিনি সেই ক্যাম্পের পরিচালক হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে স্বাধীনতাত্তোর নারী পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত অসংখ্য মা-বোন যখন দিশাহারা তখন বঙ্গবন্ধু নারী পুনর্বাসন বোর্ড গঠন করে তা পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ওপর। তৎপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ গার্লস গাইডের ন্যাশনাল কমিশনার নির্বাচিত হন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ায় বিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে কাজ শুরু করেন তিনি।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৭৬ সালে দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দিতে বাধ্য করেছিলেন তৎকালীন সরকারকে।
১৯৮১ সালে দলের জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করার ক্ষেত্রে এবং তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সাজেদা চৌধুরী ও তাঁর স্বামী মরহুম গোলাম আকবর চৌধুরীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। পরবর্তী সময়ে দলের একাধিকবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, দলকে সুসংগঠিত করাসহ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আস্থাভাজন নেতায় পরিণত হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
সর্বশেষ ২০০৭ সালে দেশের রাজনীতিতে চরম সংকটময় মুহূর্তে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বাদ দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র ১/১১ সরকার করেছিল, তা শক্ত হাতে মোকাবেলা করেন তিনি। ঘোষণা দেওয়া হয় No Hasina, No Election।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর জননেত্রী শেখ হাসিনার মাতৃস্নেহের পরশে নবম সংসদে উপনেতা নির্বাচিত হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। স্বাধীনতা পদকসহ অসংখ্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী টানা তৃতীয়বার মহিলা সংসদ উপনেতা হওয়ার বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণ, দুঃসময়ের কাণ্ডারি, সাতবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের ‘ফুফু’খ্যাত সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য কিংবদন্তি নেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দেশ ও দেশের জনগণের সেবায় নিরলস ভাবে কাজ করে গেছেন।
আজ ৮ মে এই জীবন্ত কিংবদন্তি নেত্রীর জন্মদিন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.