পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০ অক্টোবর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ২০ অক্টোবরকে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা।
নানারকম প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। গৌরব ও সাফল্যের ১৮ বছরে ক্যাম্পাসের অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রসারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এক অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করে আসছে।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাবনা, অনুভূতি, প্রত্যাশা ও অভিব্যক্তি জানাচ্ছেন নবধারা এর স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল আফনান।
বাঙালির সংস্কৃতি চর্চার আঁতুড়ঘর জবি
একটি সদ্য প্রস্ফুটিত প্রাণের নাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বাংলাবাজারে গড়ে ওঠা ১৫০ বছরের পুরাতন দেশের প্রাচীনতম এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অতীতকাল থেকেই বাঙালির শিক্ষা, সংস্কৃতি, সংগ্রাম, ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে আলো ছড়িয়ে আসছে। বাঙালির সাংস্কৃতিক চর্চার আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত এই বিদ্যাপীঠ সীমিত সময়ের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে উচ্চ শিক্ষার জন্য তরুণদের আগ্রহের জায়গায় পরিণত হয়েছে। যার ফলস্বরূপ দেখতে পাই চাকরির পরীক্ষায়,গবেষণা, বিসিএস, ব্যাংক সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে অবদান রেখে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো অবস্থানের কারণে সগৌরবে এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
শিপন মোল্লা, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন।
আমার পরিচয় আমি গর্বিত জবিয়ান
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার কাছে একটা ভালোবাসা আর আবেগের নাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার প্রাণের স্পন্দন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী হতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছেটা জেগেছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় থেকে। কোনো এক শীতের ঝরাপাতা হয়ে আমার আগমন ঘটেছিলো এর প্রাঙ্গণে। জবি যেন আমাকে বরণ করে নিয়েছিল পরম মমতায়। ইট পাথরের দেওয়াল ঘেরা নিষ্ঠুর এই নগরীতে জবি আমাকে দিয়েছিলো প্রাণের পরশ আর নির্ভরতার আশ্বাস।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হওয়ার মাধ্যমে। শিক্ষা জীবনের এক অন্যতম স্বর্ন উজ্জ্বল সময় পার করছি আর নামের পাশে যুক্ত হয়েছে আমি জবিয়ান। ক্রমবর্ধমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটি প্রতি শিক্ষার্থীর কাছে আনন্দের ও গৌরবের দিন। শুভ জন্মদিন প্রিয় প্রতিষ্ঠান। শুভ হোক তোমাতে অধ্যয়নরত প্রতিটা শিক্ষার্থীর স্বপ্ন যাতে তোমায় চিনে সারা বিশ্ব। এগিয়ে যাক প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়। বেঁচে থাকুক জগন্নাথের আকাশে ঝলঝল করতে থাকা অপার সম্ভাবনাময়ী প্রতিটা গর্বিত জবিয়ান।
ফারিজা জিমি, দর্শন বিভাগ।
সম্ভাবনাময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বর্তমানে উচ্চ শিক্ষার জন্য তরুণদের আগ্রহের জায়গায় পরিণত হয়েছে। যার ফলস্বরূপ দেখতে পাই চাকরির পরীক্ষায়, গবেষণা, বিসিএস, ব্যাংক সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে অবদান রেখে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো অবস্থানের কারণে সগৌরবে এখনো মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে। যে পরিবারটি বিভিন্ন আনন্দ-অনুষ্ঠানের একসঙ্গে মেতে ওঠে। প্রিয় এই বিদ্যাপীঠটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গুটি গুটি পায়ে সতের বছরে পদার্পণ করল। অল্প সময়ের এ যাত্রায় জগন্নাথের মেধাবী শিক্ষার্থীরা দেশব্যাপী প্রশাসনিক কার্যক্রমে ছড়িয়ে পরে সাফল্যের চিহ্ন রাখছে। এছাড়া সাংস্কৃতিক, সাংগঠনিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমেও বরাবরই অনেকটা এগিয়ে রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। সামনের দিনগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়টির এই সাফল্য ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতেই দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও এই ঐতিহ্যময় বিশ্ববিদ্যালয়টির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে।
দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যার নেই কোনো হল তাও দমে যায়নি। এগিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিবন্ধকতাগুলোকে আর্তচিৎকারে রুপ দিয়ে লিখেছি হাজারো রুপকথার গল্প যার এই মঞ্চ। এখান থেকেই তৈরি হয়েছে অসংখ্য মানুষ। দেখতে দেখতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯ তে পদার্পন করেছে, অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে জগন্নাথ আজ শুধু একটা নাম না, জগন্নাথ এখন একটা রোল মডেল। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে একটাই চাওয়া এভাবেই হাজারো স্বপ্নসারথীর সোপান হয়ে এগিয়ে যাক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
মোঃ ফাহিম হাসান, ইসলাম শিক্ষা।