মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, ভ্রুন হত্যা অতঃপর শারিরীক নির্যাতন ও বিষ খাইয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক কলেজ ছাত্র ও তার পরিবারের কয়েক সদস্য ও আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। বেশ কিছুদিনের ধারাবাহিকতায় সোমবার সন্ধায় উপজেলার গাড়ফা গ্রামে ধর্ষক বিপ্লব শিকদারের বাড়িতে বর্বরোচিত ও ন্যাক্কার জনক এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মুমূর্ষ কলেজ ছাত্রী গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ধর্ষক বিপ্লব শিকদার (২১) গাড়ফা গ্রামের বদির শিকদারের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত ওই মেয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের প্রেমের সম্পর্ক প্রায় দুই বছর। আমাদের শারীরিক সম্পর্কের ফলে আমার গর্ভে একটি বাচ্চা এসেছিল। বিপ্লব জানতে পেরে আমাকে বলে বাচ্চা ফেলে দেও। বিয়ের আগে যদি বাচ্চার কথা জানাজানি হয় তাহলে মান সম্মান থাকবে না। বিয়ের পরে আবার বাচ্চা নেওয়া যাবে। পরবর্তীতে জোর করে আমার বাচ্চা নষ্ঠ করে ফেলে বিপ্লব। এর পরে আমি বিয়ের কথা বলায় সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আমাকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেয় বিপ্লব। সেখানে বিপ্লবের মা আমাকে বলে তোমাকে আমার পুত্রবধু হিসেবে মেনে নিয়েছি, এই বলে সে আমাকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়। ঘরের ভিতর নিয়ে বিপ্লবের মাসহ চার-পাঁচজন লোক আমাকে মেরেছে। অত্যাচারের এক পর্যায়ে আমার হাত-পা চেপে ধরে তারা আমার গালে বিষ ঢেলে দিয়েছে। এরপর বিপ্লবের পিতা বদির শিকদার আমাকে নিয়ে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। সেখান থেকে ওয়াস করার পর আমার অবস্থার অবনতির কারনে আমাকে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে পাঠায়। আমি এখন চোখে ঝাপসা দেখছি। কোন কিছু পরিস্কার দেখতে পারছি না। আমি আমার ইজ্জতের বিচার চাই। আমার গর্ভের সন্তান হত্যার বিচার চাই।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, বিপ্লব শুধু আমার সাথে নয়। আরও অনেক মেয়ের সাথে সে এই ধরণের শারীরিক সম্পর্ক করেছে। ওরা আমার গর্ভের সন্তান হত্যা করেছে, এখন আমাকেও হত্যা করতে চেয়েছিল। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মেয়েটির বিধবা মা বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পরে অনেক কষ্টে বাচ্চাদের লেখা পড়া শেখাচ্ছি। আমাদের অর্থ নেই, কিন্তু মান সম্মান আছে। বিপ্লব আমার মেয়ের সাথে প্রেম করে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। আমার মেয়েকে হত্যার চেষ্টা করেছে আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযুক্ত বিপ্লবের পিতা বদির শিকদার বলেন, বছর খানেক আগে সম্পর্ক ছিলো, বিষয়টি জানার পর ওই মেয়ের অভিভাকদের সতর্ক করছি এবং আমার ছেলেকে ঢাকা নিয়ে গেছি। এছাড়া সোমবার সন্ধায় আমাদের ঘরে ঢুকে ওই মেয়ে বিষ খায়। পরে আমি নিজে তাকে প্রথমে মোল্লাহাট পরে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করি। এমনকি চিকিৎসা খরজও আমি দিচ্ছি। এরপরও মিথ্যা অভিযোগ করছে। এতে আমার সম্মান নষ্ট হচ্ছে।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম কবির নবধারা কে বলেন, বিষয়টি জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।