নাইমুল ইসলাম কল্লোল, স্টাফ রিপোর্টারঃ
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে মন্তব্য করায় গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গাজী মোহাম্মদ মাহাবুবের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজাহান।
জানা যায়, গত ৩ মে অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহানের পক্ষে গোপালগঞ্জ জর্জ কোর্টের আইনজীবী আলহাজ্ব এম. জুলকদর রহমান এ নোটিশ দেন।
উকিল নোটিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গাজী মোহাম্মদ মাহাবুব বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির ফেসবুক পেজে এক শিক্ষকের দেওয়া পোস্টে মন্তব্য করার জন্য এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, গাজী মোহাম্মদ মাহাবুবের মন্তব্যের কারণে ডিনস কমিটির সম্মানহানি হয়েছে। ৩ দিনের মধ্যে উপযুক্ত ব্যাখ্যা প্রদান না করা হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ প্রচলিত আইনে মামলার বিষয়টিও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে নোটিশের বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক গাজী মোহাম্মদ মাহাবুব বলেন, “শিক্ষকদের পদোন্নতির বিষয়ে নিয়ম বহির্ভূত শর্ত যুক্ত করার জন্য জবাবদিহি করার কথা লিখেছি। তাছাড়া শিক্ষকদের ফেসবুক পেইজে ডিনদের যুক্ত করার কথা বলেছি। প্রয়োজনে তাদের প্রযুক্তি শিক্ষা দিয়ে যুক্ত করার কথা বলেছি। এরকম সামান্য লেখার কারণেই উকিল নোটিশ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার হুমকি দেওয়া হয়েছে, যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন এবং প্রথমবার ঘটলো।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব নবধারা কে বলেন, “কেউ যদি কোনো শিক্ষককে সম্মানহানির মতো মন্তব্য করে সে বিষয়ে ভুক্তভোগী আইনের আশ্রয় নিতেই পারেন। বিষয়টি আমরা জেনেছি। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে এ বিষয়ে কাজ করা হবে।”
এদিকে আইনি নোটিশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাধারণ শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের প্রতিনিধি সদস্যগণ মনে করেন যে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস আশানুরূপ না। কিন্তু এই মহামারিকালীন সময়ে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের পাঠদান এবং কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সকল বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছে।
শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষকের উকিল নোটিশ এবং মামলার হুমকিতে সকলে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষকরা। তারা মনে করেন, এমন আইনি নোটিশ এলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলার পথ বন্ধ হয়ে যাবে আমাদের।
নবধারা/বিএস