নবধারা ডেস্ক
আসন্ন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থিতা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন ক্রমশ ঘনিয়ে আসলেও কে কে এবার চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন এ নিয়ে জট খুলছে না। ইতোমধ্যে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ কয়েকটি অনুষ্ঠানে গিয়ে তার প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন।
এছাড়াও লোকোমুখে যাদের প্রার্থিতার গুঞ্জন শোনা যায় তারা হচ্ছেন-টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ সোলায়মান বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক তরুণ নেতা গাজী মাসুদুল হক ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব লায়েক আলী বিশ্বাসের আরেক পুত্র টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বি আর ডিবির চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, প্রেসক্লাব টুঙ্গিপাড়ার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বিএম মাহমুদ হক ।
মোঃ সোলায়মান বিশ্বাস :
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ভাইজান খ্যাত সোলাইমান বিশ্বাস বর্তমান মেয়াদসহ দুইবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি টুঙ্গিপাড়া পাটগাতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। দুর্দিনে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের প্রাণ ভোমরা হিসেবে পরীক্ষিত রাজনীতিবিদ মোঃ সোলায়মান বিশ্বাস উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ও পরে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ছিলেন।তিনি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গত নির্বাচনে তিনি মোঃ বাবুল শেখ কে মাত্র ২৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি দুরারোগ্য ব্যাধীতে আক্রান্ত হয়ে পুরোটা সময়ে জনসেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে পারেননি। এখনো তিনি পুরোপুরি সুস্থ নন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন কিনা সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। তিনি প্রার্থী হলে তার অসুস্থতা ভোটারদের মনে প্রভাবিত করে তার জয় লাভের প্রধান নিয়ামক হতে পারে। তিনি এবারের ভোটে নির্বাচিত হলে ৩য় মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মোঃ বাবুল শেখ-
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ একজন পরিশ্রমী সৎ এবং ন্যায্য বিচারক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। টুঙ্গিপাড়া রাজনীতিতে তার অবস্থান এখন সুদৃঢ়। গত নির্বাচনে তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ সোলায়মান বিশ্বাসের কাছে ২৮ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। এবার তার ঘর প্রায় গোছানো। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তিনি হতে পারেন পরবর্তী উপজেলা চেয়ারম্যান। তবে সোলায়মান বিশ্বাস প্রার্থী হলে তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দিতার মুখোমুখি হতে হবে।
গাজী গোলাম মোস্তফা-
গাজী গোলাম মোস্তফা বর্তমান মেয়াদের আগে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে মোঃ সোলায়মান বিশ্বাসকে পরাজিত করে উপজলো পরিষদে বসেন।তিনি সেই মেয়াদে সাধারণ মানুষের বিপুল প্রত্যাশার চাপ পূরণ করতে পারেননি। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নিখাদ ভদ্রলোক গাজী গোলাম মোস্তফা প্রার্থী হলে প্রথমে তাকে তার ঘর সামলাতে হবে। সেক্ষেত্রে তার বংশের প্রার্থী গাজী মাসুদুল হককে ম্যানেজ করে মাঠে নামতে হবে। এটি তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সব মিলিয়ে তিনি প্রার্থী হলে নির্বাচনী ভোটের পালে হাওয়া বাড়বে ।
গাজী মাসুদুল হক –
তরুণ উদয়মান নেতা টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মাসুদুল হক এবার প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে মাঠে রয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যাচ্ছে। তিনি প্রার্থী হলে তার বংশের অগ্রজ গাজী গোলাম মোস্তফাকে ম্যানেজ করে তাকে ভোটের মাঠে নামতে হবে। অন্যদিকে গত নির্বাচনেও তিনি প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে রহস্যজনক কারণে তিনি ভোটের মাঠ ত্যাগ করেন। এ নিয়ে জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। গাজী মাসুদুল হক গিমাডাঙ্গা গ্রামের একক প্রার্থী হতে পারলে ও শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকলে নির্বাচনে ভালই প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হবে।ক্রীড়াঙ্গন্রের এই আনপ্রেডিকটেবল জনপ্রিয় মানুষটি শেষ পযন্ত মাঠে থাকবেন কিনা এ নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে।
বি এম মাহমুদ হক-
বিশ্বাস পরিবারের আরেক সন্তান আলহাজ্ব লায়েক আলী বিশ্বাস এর পুত্র, বিআরডিবির চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাব টুঙ্গিপাড়ার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বি এম মাহমুদ হক নির্বাচনের প্রার্থী হবার কথা জানিয়েছেন। তবে তার প্রার্থিতা অনেক কিন্তু যদি যেহেতু সেহেতু এর পাকে বন্দি রয়েছে। যদি সোলায়মান বিশ্বাস অসুস্থতার কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহন না করেন সেক্ষেত্রে বিশ্বাস পরিবারের প্রার্থী হিসেবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বি এম মাহমুদ হক। সে ক্ষেত্রে মাহমুদ হক কে তার পরিবারের সমর্থন আদায় করে সবাইকে একসাথে করে নিয়ে মাঠে নামাটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তার পরিবার টুঙ্গিপাড়ায় একটি বড় রাজনৈতিক পরিবার হওয়ায় সকলের সমর্থন পাওয়া তার জন্য কঠিন হবে। তিনি যে তার বড় একটি পরিবারের সকলের সমর্থন নিয়ে আসন্ন নির্বাচনে মাঠে নামবেন সে প্রত্যাশা করাটা এই মুহূর্তে ভীষণ কঠিন।
আসন্ন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে কে প্রার্থী হচ্ছেন সে বিষয়টি আরো সপ্তাহখানেক পার হলে পরিষ্কার হওয়া যাবে। গাজী পরিবার থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন মোস্তফা গাজী নাকি মাসুদ গাজী ?
অন্যদিকে টুঙ্গিপাড়ার স্থানীয় ভোটের রাজনীতিতে প্রভাবশালী বিশ্বাস পরিবারের পক্ষ থেকে কে প্রার্থী হবেন সেটিও পরিষ্কার হতে সপ্তাহখানেক সময় লেগে যাবে। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান চিকিৎসা করাতে এই সপ্তাহে দিল্লিতে যাবার কথা রয়েছে। তিনি ফিরে আসলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে যে কজনই প্রার্থী হোক না কেন এবারের নির্বাচনটি হবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ বনাম – ।
নির্বাচনের শক্তিশালী মূল প্রার্থী হিসেবে মোঃ বাবুল শেখ মাঠে রয়েছেন তার বিরুদ্ধে কে প্রার্থী হবেন সেটি চূড়ান্ত হতে সময়ের অপেক্ষা করতে হবে।