মোঃ মিজানুর রহমান,কালকিনি ও ডাসার প্রতিনিধি
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন ও ডাসার ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দীনেশ রাজবংশী এর বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) ২০২৪ ইং তারিখ সকালে বালিগ্রাম ইউনিয়নের ধুলগ্রাম ভূমি অফিসের সামনে ভূক্তভোগীরা ওই ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ভূমি কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
এবিষযয়ে একাধিক ভুক্তভোগী পরিবার ও একাধিক সূত্রের তথ্য মতে, উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন যোগদানের পর থেকে তিনি সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে প্রত্যেকটি নামজারি করার জন্য ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন।
তিনি এলাকার অসহায় কৃষকের জমি নামজারি ও দাখিলাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে দেয়ার কথা বলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা।
তিনি নামজারির টাকা নিয়ে ৭ থেকে ৮ মাস যাবৎ ঘুরাচ্ছেন বলে ভূক্তভোগীদের দাবি। এতে করে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলার ধুলগ্রাম ভূমি অফিসের সামনে ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য দাবি জানান।
ভুক্তভোগী বালিগ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহ আলম মাতুব্বর, বলেন,আজ থেকে ৬-৭ মাস আগে ভূমি কর্মকর্তা কবির হোসেন আমার একটা জমির নামজারি করতে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন, আমি তার সাথে ১৮ হাজার টাকায় চুক্তি করে নগদ ১২ হাজার টাকা দেই, এখন পর্যন্ত আমার নামজারি করে দিচ্ছে না। এবং টাকা ফেরত ও দিচ্ছে না।
সে সরকারের কোন নিয়ম নীতি তোয়াক্কা করে না। আমি তার বিচার দাবি করছি।
এবিষয়ে বালিগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুয়াসার এলাকার নব্বই বছর বয়সী আদেলদ্দিন বলেন, মুই ৬ -৭ মাস আগে মোর জমির নামজারি করতে তসিলদারকে ৭ হাজার টাহা খরচ লাগবে কইছে,মুই ৫ হাজার টাহা দিছি, এহন মোরে খালি ঘুরায় মোর মিউটেশন করিয়া দেয় না। মুই এই কথা কইতে ডাসার উপজেলার বড় স্যারের ধারে যামু।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তহশিলদার মোঃ কবির হোসেন বলেন আমি কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নেই না, সবাই আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।
বালিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান খান বলেন, আমি শুনেছি তসিলদার অসহায় মানুষের কাছ থেকে জমির নামজারি করে দিবে বলে হাজার হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে় ঘুরাঘুড়ি করেন। আমি ওনাকে এলাকার অসহায় মানুষের কাছ থেকে ঘুষ না নেওয়ার জন্য সতর্ক করেছি। তার পরেও তসিলদার ঘুষ নেওয়া বন্ধ করেন নাই।
অপর দিকে ডাসার ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দীনেশ রাজবংশী এর বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। ডাসার ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দীনেশ রাজবংশী যোগদানের পর থেকে তিনি সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে প্রত্যেকটি নামজারি করার জন্য ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। এলাকার অসহায় কৃষকের জমি নামজারি ও দাখিলাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে দেয়ার কথা বলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা।
বালিগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন ও ডাসার ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দীনেশ রাজবংশী এর বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেওয়া আশ্বাস দিয়েছেন ডাসার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ আফরোজ।