শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সকল প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করার পর অনুমোদনযোগ্য বিবেচিত হওয়ার পরও একজন শিক্ষক বদলি বঞ্চিত রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম মোঃ হুমায়ুন কবীর। তিনি উপজেলার দূর্গম পদ্মা নদীর ওপারে অবস্হিত পাবনা জেলার সীমান্তবর্তী দেবগ্রাম ইউনিয়নের বেতকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। বিক্ষোভের মুখে সদ্য বদলি হওয়া রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহীন্দ্র কুমার মন্ডলের গাফিলতি ও চূড়ান্ত অবহেলার কারনে তিনি বদলির চূড়ান্ত অনুমোদন পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষক গত ৫ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নিকট পুনরায় আবেদন করেছেন।
আলাপকালে শিক্ষক হুমায়ুন কবীর জানান গত ৩১ মার্চ অন্তঃ উপজেলা বদলির বিজ্ঞপ্তির সকল শর্ত পূরন করে তিনি বদলির আবেদন করেন। এরপর সকল প্রক্রিয়া শেষে মহাপরিচালকের প্রশাসনিক বিভাগ হতে তাকে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের হারেজ মিয়ার পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিস্হাপন সাপেক্ষে বদলির জন্য নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু আবেদনটি সঠিক এবং অনুমোদনযোগ্য হওয়া সত্বেও নির্ধারিত সময়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পরবর্তী মূল্যায়ন সম্পন্ন করেননি। ফলে আবেদনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে তিনি বৈষম্যের শিকার হন।
তিনি আরো জানান, দূর্গম চরের ওই স্কুলে যেতে তাকে প্রতিদিন গোয়ালন্দ পৌরসভায় তার নিজ বাড়ি হতে অন্তত ৮ কিলোমিটার সড়কপথে রিক্সা বা অটোরিকশা যোগে পদ্মা নদীর অন্তারমোড় খেয়াঘাটে পৌঁছাতে হয়। এরপর ওখান থেকে ট্রলার যোগে অন্তত ৪ কিলোমিটার উত্তাল পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে রাখালগাছি খেয়াঘাটে পৌঁছাতে হয়। সেখান থেকে আবার ২ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বা রিকশায় চড়ে স্কুলে পৌছাতে হয়। তবে শুস্ক মৌসুমে মূল পদ্মা নদীর প্রশস্ততা অনেকটা কমে আসে। তখন ট্রলার থেকে বেতকার চরে নেমে প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ বালুর মধ্য দিয়ে হেঁটে তাকে স্কুলে পৌছাতে হয়। এভাবে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে তাকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এরপর রয়েছে সময়মতো ট্রলার পাওয়া না পাওয়ার দুঃচিন্তা।২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি যোগদানের পর হতে তিনি এভাবেই প্রতিদিন সংগ্রাম করে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ বাবর আলী বলেন, শিক্ষক হুমায়ুন কবীর অন্যায়ভাবে বদলী বঞ্চিত হয়েছেন। তার আবেদনটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর বর্তমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ তবিবুর রহমান জানান, শিক্ষক হুমায়ুন কবীরের বদলির বিষয়টি সুসম্পন্ন না হওয়াটা দুঃখজনক। তার পুনরায় করা আবেদনটি ডিজি অফিস থেকে আমার কাছে আসলে আমি আন্তরিকতার সাথে বিষয়টি দেখব।