সৎভাবে যারা ব্যবসা করে, চাকরি করে তারা অর্থ পাচার করে না বলে মন্তব্য করেছেন ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ। তিনি বলেছেন, অর্থ পাচার তারাই করে যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, লুটের, যাদের ব্যাংক ডাকাতি করতে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (এফডিসি) ৮ নম্বর ফ্লোরে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে করণীয়’ শীর্ষক ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন।
আবু আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের দেশ থেকে অর্থ পাচার কমিয়ে রাখতে পারি, তবে শূন্যের কোঠায় আনতে পারব সেটা বলবো না। ঘুষ খাওয়া ও লুটেরা দল সৃষ্টি থেকে বিরত থাকতে পারি। যারা ব্যাংক ডাকাতি করত, তাদের মতো গোষ্ঠী আমরা এখানে আর দেখতে চাই না। তাহলে কিন্তু অর্থ পাচার তেমন হবে না।
তিনি বলেন, যখন এ দেশ থেকে মুদ্রা পাচার হতো লাখ-কোটিতে, তখন তো আমাদের বাংলাদেশের টাকা নিয়ে যায়নি। তারা আমাদের ডলারগুলো নিয়েছে। বিদেশের যেসব কালেক্টিং বুথ আছে, এজেন্ট তাদের কাছ থেকে নিয়েছে। এখানেও তাদের এজেন্ট আছে। তারা ব্যাংক লুট করেছে আর ডলারে কনভার্ট করে টাকাগুলো নিয়ে গেছে। যেগুলো আমাদের দেশে আসতো।
হুন্ডি প্রথা একবারের লোপ পাবে সেটা আমরা আশা করতে পারি না বলেও মন্তব্য করেছেন এ অর্থনীতিবিদ।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দেশের কর্মক্ষম ২৫ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান হয় অভিবাসনের মাধ্যমে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান না করা গেলে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আরও ১০ শতাংশ বেড়ে যেত। এ দেশের উন্নয়নের মূল নায়ক কৃষক, শ্রমিক, মজুর, সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে সারা পৃথিবীতে অবস্থানকারী অভিবাসী ভাই-বোনেরা। অভিবাসী কর্মীরা আমাদের সোনার সন্তান। যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাদের ঘামে উপার্জিত রেমিট্যান্স দেশে পাঠান। তাদের উপার্জিত আয়ের কারণেই আমাদের রিজার্ভ বেড়েছে, আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে জুলাই বিপ্লবের সময় প্রবাসী আয় এসেছে মাত্র ১.৯১ বিলিয়ন ডলার। অথচ আওয়ামী সরকার পতনের পর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসে প্রবাসী আয় ২৬ শতাংশ বেড়ে দাঁডিয়েছে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারে। মূলত জুলাই মাসে হাসিনা সরকারের প্রতি অনাস্থা এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দেন। পতিত আওয়ামী সরকার যদি আরও বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতো, আমার ধারণা প্রবাসী ভাই-বোনেরা তাদের রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধই করে দিতেন। চলতি বছরসহ গত তিন বছরের প্রবাসী আয়ের হিসাব করলে দেখা যায় এর গতি উর্ধ্বমুখী। ২০২২ সালে আমাদের প্রবাসী আয় ছিল ২১.২৯ বিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালে ছিল ২১.৯২ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি বছর ২০২৪ এ প্রবাসী আয় সাড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘অভিবাসী কর্মীদের যথার্থ মূল্যায়নই রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে পারে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রতিযোগিতায় প্রস্তাবের পক্ষে বিতর্ক করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিপক্ষে বিতর্ক করে রানার আপ হয়েছে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ।
অনুষ্ঠানটি আয়োজনে সহযোগিতা করছে হেলভেটাস বাংলাদেশের সিমন্স প্রকল্প।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন- অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, ড. জামিল আহমেদ, সাংবাদিক মিরাজ হোসেন গাজী ও সাংবাদিক আরাফাত আরা।
প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলকে পুরস্কার হিসেবে ট্রফি, সনদপত্র দেওয়া হয়। এছাড়াও চ্যাম্পিয়ন দলকে ৩০ হাজার ও রানার আপ দলকে ২৫ হাজার টাকা নগদ অর্থ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.