শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে ১১ শতাংশ জমির উপর থাকা পোল্ট্রি খামারসহ কয়েকটি স্হাপনা কিনে বিপাকে পড়েছেন এক নারী। হামলার ভয়ে তিনি ওই সম্পদের দখলে যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
ভুক্তভোগী নারীর নাম ববি বেগম। তার স্বামীর নাম আজাদ শেখ। বাড়ি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের আড়ৎপট্টি এলাকায়।
ফার্মের বিক্রেতা আমিনুল হক লাবু। তিনি উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সিদ্দিক কাজী পাড়ার মোঃ কুদ্দুস মিয়ার ছেলে।
১১ শতাংশের ওই জমিটি উপজেলার চর দৌলতদিয়া মৌজার ১ নং ফেরিঘাটের পূর্বে বিএস ২০০ নং দাগের অন্তর্গত।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর আদালতে এ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে ববি বেগম জমিটার উপর তিনটা বসতঘর, ২ টি গরুর খামার ও ১ টি দোকানঘর সহ অন্যান্য স্হাপনাদি ক্রয় করেন।
ববি বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমিনুল হক তার নিকট ওই স্থাপনাগুলো বিক্রি করে ধারদেনার কারনে বিগত তিন বছর ধরে এলাকা ছাড়া রয়েছেন।
এর মধ্যে আমিনুলের বড় ভাই মিজানুর রহমান (বাবুল) ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল তারিখে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় তার স্ত্রী মোছাঃ শিল্পী খাতুনের নামে একটি ভুয়া এ্যাফিডেভিট তৈরি করে ওই জমির মালিকানা দাবি করছেন । কিন্তু তার নোটারীতে জমির পরিচয় দেখানো হয়েছে ৪৪ নং মৌজার বাহেরচর দৌলতদিয়া। যেখানে জমির দাগ ও জমির পরিমান উল্লেখ করা নেই। জমির উপর ডেইরি ফার্মের অবস্হানও উল্লেখ নেই। জমির দাতা উল্লেখ করা হয়েছে মিজানুর রহমান (বাবু) নিজে, তার বাবা আঃ কুদ্দুস মিয়া,মা রোকেয়া বেগম ও ছোটভাই আমিনুল হক লাবুর নাম ।
এদিকে ববি বেগমের দাবি , তাদের ওই কাগজটি সম্পূর্ণ ভুয়া।
ববি বেগম আরো জানান, তিনি জমির উপর থাকা স্হাপনাদি দখলে নিতে গেলে তাকে নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
সরেজমিন আলাপকালে লাবুর বন্ধু হারুন বলেন, লাবু ১১ শতাংশ জমির উপর থাকা স্হাপনা বিক্রি বাবদ ববি বেগমের কাছ থেকে আমার মাধ্যমে নগদ ৪ লক্ষ টাকা নেয়। পরবর্তীতে তার কাছ থেকে আরো ৪ লক্ষ সহ মোট আট লক্ষ টাকা নিয়ে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ১১ জমির উপর থাকা স্হাপনাদি বিক্রি করে।
প্রতিবেশী রেশমা আক্তার জানান, ওই জমির ঘরের ডওয়া আগে কাঁচা ছিল। পরে লাবু ঘরের ডওয়াগুলো পাকা করে। পরে তারা ভাইয়েরা আলাদা হওয়ার পর লাবু নিজেই গরুর ফার্ম ও মুরগির ফার্ম করে। এটা আমরা এলাকার সবাই জানি।
এদিকে লাবুর বড় ভাই মিজানুর রহমান বাবলু দাবি করে বলেন,
আমার ছোট ভাই ব্যবসায়ীক লেনদেনে আমার স্ত্রীর বড়ভাই জামালের কাছে ১৫ লক্ষ টাকা দেনা হয়। সে সময় জামালের দায়ের করা একটি মামলায় আমার ছোট ভাই আমিনুল জেলে যায়।
এ অবস্হায় আমার জামাল ভাই দাবি করেন, আমরা যদি ওই জমি ও ঘরবাড়ি তার নামে লিখে দেই তাহলে তিনি মামলা তুলে নেবেন। তখন আমি, আমার বাবা ও জেলে থাকা ছোট ভাই তিনজনে মিলে স্ট্যাম্পে সই দিয়ে তার নামে জমি লিখে দেই। পরবর্তীতে ওই সম্পদ আমার ভায়রা আমার স্ত্রীর নামে লিখে দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, আমি এনজিও আশা থেকে আড়াই লক্ষ টাকা তুলে দিয়ে আমার ছোট ভাইকে ফার্ম করতে সহায়তা করি। তাহলে এই ফার্ম তার হবে কেন?
জমি ও ফার্ম দুটোই আমাদের। তাছাড়া আমি ববি বেগমকে কোন ধরনের হুমকি- ধামকিও দেইনি।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম জানান, ববি বেগম আমার নিকট এসেছিলেন। জমিজমার বিষয় বলে আমি তাকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তবে হুমকি-ধমকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.