শফিকুল ইসলাম সাফা,চিতলমারী
টমেটো চাষ করে এখন বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। বাজারে ক্রেতা না থাকায় চাষকৃত টমেটো ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। ঘায়ের ঘাম পায়ে ফেলে যারা টমেটো চাষ করেছেন তাদের দুর্দশার শেষ নাই। এ অবস্থায় বাগেরহাট চিতলমারী উপজেলার টমেটো চাষিদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
সরোজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার হিজলা, কলাতলা, শিবপুর, বড়বাড়িয়া, চিতলমারী সদর, চরবানিয়ারী ও সন্তোষপুর ইউনিয়নের আবাদী অনাবাদী ও চিংড়ি ঘেরের পাড়ে ব্যাপকভাবে শীতকালীন টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেতে টমেটোর বাম্পার ফলন হলেও বাজারে সেগুলি বিক্রি না হওয়ায় পাকা টমেটো ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় চাষিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।
স্থানীয় চাষিরা জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে টমেটো চাষে লাভবান হওয়ায় এটি ব্যাপকভাবে চাষ করা হচ্ছে। এ বছর বাজার দর শুরুতে কিছুটা ভাল থাকলেও বর্তমানে দুই থেকে তিন টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ঋণগ্রস্ত অনেক চাষিদের মধ্যে চরম হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর শীত মৌশুমে ৮শ, ৩৯ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। এসব টমেটোর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের হাইটম, বিউটি, বিউটিফুল টু, বিপুল প্লাস, চক্র, পান পাতা, মেজর, বাহুবলিসহ বিভিন্ন জাতের টমেটো চাষ করা হয়েছে। বিগত সময়ে এসব জাতের টমেটো চাষ করে চাষিরা লাভবান হলেও এ বছর বাজার দর হঠাৎ করেই কমে গেছে। এতে চাষিরা তাদের আসল চালান উঠাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের টমেটো চাষি সুব্রত মন্ডল, শামিম শেখ সহ অনেকে জানান যে, বাজারে কোন টমেটো তুলে নিলে সেগুলি বিক্রির জন্য পাইকারি মিলছে না। সামান্য কিছু বিক্রি হলেও সেটি দুই থেকে তিন টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্ষেত থেকে তুলে আনার খরচও উঠছে না। এ অবস্থায় এটি চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা। এসব চাষিরা আরো জানান, অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও এবং দাদন ব্যবসায়িদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে টমেটো চাষে ব্যয় করেছেন এখন তাদের ঋণের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবেন সেব্যাপারে দিশেহারা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির মাধ্যমে চাষিরা যাতে ন্যায্য মূল্য পান সে দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকার টমেটো ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান জানান, রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এলাকার টমেটো চালন হয়ে থাকে। বর্তমানে রাজধানীর বাজারে টমেটোর চাহিদা না থাকায় তারাও বিক্রি করতে পারছেন না ফলে পাইকাররা এখন আর এখানে টমেটো ক্রয়ের জন্য আসছেন না। এ কারণে টমেটো আগ্রহ করে কিনছেন না তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার সিফাত আল মারুফ জানান, কৃষি অফিস থেকে বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে। কেন চাষিরা টমেটোর ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না সেটি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.