যবিপ্রবি প্রতিনিধি,রায়হান আহমদ
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ এফ এম সাইফুল ইসলাম কে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রো-ভিসি নিয়োগের চেষ্টার প্রতিবাদে এবার সংবাদ সম্মেলন করেছে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। এসময় তাঁরা লাগাতার কর্মসূচি ও বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউনের হুশিয়ারি দেয়।
বৃহস্পতিবার(১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় যশোর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এসময় লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর হিসেবে পরিচিত সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের স্বামী সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর এফ এম সাইফুল ইসলামকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টা চলছে বলে আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম মারফত জানতে পেরেছি। ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে রাতের ভোটের মূল কারিগর ছিলেন। যার পুরস্কার স্বরূপ পরবর্তীতে তাকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। চাকুরী শেষে আবারো পুরুস্কার হিসেবে শেখ হাসিনা তাকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেই গত বছরের ৮ অক্টোবর ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমকে পিএসসির সদস্য থেকে বরখাস্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, আওয়ামী শাসন আমলে ২০১২ সালে স্ত্রী ড. নাজমানারা খানুমের লবিংয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন ড. সাইফুল। সিকৃবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে দুই দুইবার সিকৃবির সিন্ডিকেট সদস্য (২০১৪-১৬ ও ২০২২-২৪ সাল) নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়াও ২০১৫-২০১৭ সালে কৃষি অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন ড. সাইফুল। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এই স্বৈরাচারের দোসর ড. সাইফুলকে যবিপ্রবির প্রো ভিসি নিয়োগ করা হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিবো। এই স্বৈরাচার কে নিয়োগ দেওয়া মানে দুই হাজার শহীদের রক্তে সাথে বেইমানি করা। যারা এই আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুর্ণবাসন করতে চায় তারা যেই হোক না কেন? শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে তাদেরকে রুখে দিবে।
এ সময় কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির বলেন, আমাদের এইটুকু ক্যাম্পাসে প্রোভিসি পদের প্রয়োজনীয়তা দেখিনা। আর আমরা স্বৈরাচারের দোসর ও আওয়ামী পন্থী কোন শিক্ষককে ক্যাম্পাসে নতুন করে নিয়োগ চাইনা। আমরা জেনেছি যে, ড. সাইফুল ইসলাম তার বিশ্ববিদ্যালয়ই থেকে বিতাড়িত হচ্ছে। তাহলে তাকে কিভাবে যবিপ্রবিতে আবার নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। যবিপ্রবি কি ডাস্টবিন?
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন আলী বলেন, আমরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি করেছি এবং আমাদের দাবি একটাই স্বৈরাচার ও আওয়ামী পন্থী কোনো অধ্যাপক কে প্রো-ভিসি হিসেবে চাই না। এমন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার যে প্রচেষ্টা চলছে তা যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি ঘোষণা করবো। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়কে শাটডাউন ঘোষণা করে দেব।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক ডক্টর এ এফ এম সাইফুল ইসলামকে যবিপ্রবির প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টার খবর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সোমবার রাতে মশাল-মিছিল করেন। পরে মঙ্গলবার ও বুধবার গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর গ্রহণ করেছে। বুধবার রাত সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.