মো.জিহাদুল ইসলাম, কালিয়া, নড়াইল
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌসের ঘুষের লেনদেনের প্রতিবাদ করায় এক ইউপি সদস্য ও এক ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।
এ অভিযোগ তুলে ০১ লা মার্চ (শনিবার) বিকেলে উপজেলার চাঁচুড়ি বাজার এলাকায় নড়াইল-কালিয়া আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয়রা। এসময় তারা নির্বাচন কর্মকর্তার বিচার, তাঁর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কারাগারে থাকাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেছেন। কারাগারে থাকা ওই ইউপি সদস্যের নাম আনিস শেখ।
তিনি কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য। অন্যজন চাঁচুড়ি বাজারের ব্যবসায়ী ও ইউনিয়ন বিএনপির প্রচার সম্পাদক মিল্টন মোল্যা।
মানববন্ধনকারীদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেয়ারি) দুপুরে কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভোটার হালনাগাদের কাজ চলছিল। সেখানে উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসের নেতৃত্বে কাজ করছিলেন একটি দল। ওই দলের আউট সোর্সিংয়ের কর্মচারী সাকিলের মাধ্যমে ভোটার হতে আসা সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে ঘুষ নিচ্ছিলেন নির্বাচন কর্মকর্তা।
এসময় পরিষদে অবস্থানরত ইউপি সদস্য আনিস ও ব্যবসায়ী মিল্টন এ কাজে বাঁধা প্রদান করেন। একপর্যায়ে যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল তাঁদের একজনকে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন সাকিল ও নির্বাচন কর্মকর্তা। টাকা ফেরত দেওয়ার ভিডিও একটি ফুটেজে ফেসবুকে ঘুরছে। অথচ ওইদিন এখান থেকে কালিয়া থানায় গিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি মিথ্যা মামলা করেন। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার রাতেই ইউপি সদস্য আনিস ও ব্যবসায়ী মিল্টনকে রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওই মিথ্যা মামলা এবং গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চাঁচুড়ি বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবিদ হাসান সবুজ, আনিচ মেম্বারের মেয়ে মারিয়া ইসলাম তিসা, স্ত্রী রহিমা বেগম, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নেছার উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিন বিশ্বাস, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনি প্রমুখ।
তারা বলেন, নির্বাচন অফিসের লোকজনদের নিজেদের দোষ ঢাকতে আনিস ও মিল্টনের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা আনিস ও মিল্টনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আজ এখানে সমবেত হয়েছি। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানাচ্ছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের মুক্তি এবং নির্বাচন কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে আমরা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করব।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মোল্যা, পাঁচগ্রাম ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার মোল্যা, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিল্টন হোসেন, উপজেলা বিএনপি নেতা ও ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি জামিরুল ইসলামসহ হাজার হাজার প্রতিবাদি জনতা। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা মিছিল সহকারে চাচুড়ী বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে কালিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে মুঠোফেনে কথা হলে তিনি বলেন, ঘুষ গ্রহনের বিষয়টি ভিত্তিহীন ও সাজানো। ভোটার হালনাগাদের সময় ইউপি সদস্য আনিস বারবার অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ভোটার করার জন্য হালনাগাদকারীদের চাপ দেন।
এ কাজে বাঁধা প্রদান করি। তখন তাঁরা (ইউপি সদস্য ও তাঁর সঙ্গীরা) কোনো পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হালনাগাদ কাজে নিয়োজিত নির্বাচন অফিসের এক আউটসোর্সিং কর্মীর সঙ্গে টাকাপয়সার লেনদেন করছে। এটা পরিকল্পিতভাবেই তাঁরা করেছে। তাঁরা সরকারি কাজ করার সময় ওই ছেলেকে মারপিট করেছে। একইসাথে তারা আমাকে আটকে কিছু অপ্রাপ্তবয়স্ক ভোটারদের ফর্মে স্বাক্ষর নিয়েছে। অতঃপর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে মামলা দায়ের করেছি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.