শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে দালাল চক্রের হাতে একজন প্রকৌশলী লাঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মোঃ নাজিম রেজা নামের ওই প্রকৌশলী গাজীপুরে উত্তরা মটরসে এজিএম পদে কর্মরত আছেন। ঈদের ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে তিনি সপরিবারে কর্মস্হলে ফেরার পথে দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। এ বিষয়ে তিনি ফেসবুক লাইভে বিস্তারিত তুলে ধরে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কঠোর ভুমিকা প্রত্যাশা করেন।
মুঠোফোনে প্রকৌশলী নাজিম রেজা যুগান্তরকে জানান, তার বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকন্দি উপজেলার নাড়ুয়ার। ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার জন্য একটি প্রাইভেটকার যোগে শ্বশুরবাড়ি পাংশা হতে স্ত্রী-সন্তানসহ বৃহস্পতিবার ভোরে রওনা দেন এবং সকাল সারে ৬ টার দিকে দৌলতদিয়ার ৭ নং ফেরিঘাটে পৌছান। কিছু সময় পর তারা ফেরিতে উঠার সুযোগ পান। কিন্তু ফুল লোড হয়ে যাওয়ার পরও ফেরিটি ছেড়ে না যাওয়ায় যাত্রী ও চালকরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এ সময় তিনি ফেরির মধ্যে হৈ চৈ শুনে এগিয়ে যান। তখন দেখতে পান একটি গাড়ির টিকিট জাল নিয়ে কয়েকজনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। তিনি বিতর্কিত টিকিটটি হাতে নিয়ে তার মোবাইল ফোনে কয়েকটি ছবি তুলেন। এতে দেখা যায় টিকিটের চালকের কাছে থাকা কপি এবং জাহাজ কপির মধ্যে বেশ গড়মিল। টিকিটের একটি অংশের তারিখ কিছুটা ঘসামাজা। এক পর্যায়ে এক ব্যাক্তি যিনি সম্ভবত ফেরির ষ্টাফ, তিনি জাল টিকিটের দায়ে ট্রাকটিকে ফেরি হতে নামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।
নাজিম রেজা আরো জানান, তিনি ছবি তুলে কিছুদূর সরে যাওয়ার পরই ২৫-২৬ বছর বয়সী কয়েকজন যুবক তার কাছে এগিয়ে আছে। এ সময় তারা টিকিটের ছবি তুলেছি বলে আমাকে শাসাতে থাকে এবং আমার তোলা সকল ছবি ও ভিডিও ডিলিট করতে বলে। এ নিয়ে আমি প্রশ্ন তুললে তারা নিজেদেরকে ছাত্রদলের নেতা পরিচয় দিয়ে আমার কলার চেপে ধরে এবং গায়ে হাত তোলে। পরে ফেরিতে থাকা কয়েকজন প্রাইভেট কার চালক এসে তাদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে।
এ অবস্থায় দৌলতদিয়া অফিস থেকে একজন কর্মকর্তা এসে বিতর্কিত ওই টিকিট পরিক্ষা করার পর প্রায় ৩০/৪০ মিনিট বিলম্বে ফেরিটি ঘাট ছাড়ে। এতে কর্মমুখী মানুষের মূল্যবান সময়ের অপচয় হয়।
নাজিম রেজা অভিযোগ করেন, এরা দালাল সিন্ডিকেটের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে এরা এইঘাটে সক্রিয়। এদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই লাঞ্চিত হতে হয় বলে এতদিন জেনে এসেছি। আজকে আমি লাঞ্চিত হলাম।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মেদ আলী শিপন বলেন, তিনি ফেরিতে নাজিম রেজা নামক ব্যাক্তির ফেসবুক লাইভটি দেখেছেন। ছাত্রদলের পরিচয়ে তাকে লাঞ্চিত করার যে অভিযোগটি এসেছে তা আমরা খতিয়ে দেখব। আদৌ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে ছাত্রদলের কেউ জড়িত কিনা, হলেও তারা কারা তা যাচাই করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিসি'র দৌলতদিয়া অফিসে কর্মরত এজিএম (বানিজ্য) মোঃ সালাউদ্দিন জানান, ৭ নং ফেরিঘাটে টিকিট চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকা তাদের কর্মী ঠিকভাবে টিকিটটি বুঝতে না পারার কারনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে তাদের একজন কর্মকর্তা গিয়ে টিকিটটি পরিক্ষা করার পর ফেরি ছাড়ে। টিকিটটি জাল নয় বলে তিনি দাবি করেন।তবে এ ঘটনার জেরে কোন ব্যাক্তি কারো দ্বারা লাঞ্চিত হয়েছেন কিনা আমার জানা নেই।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.