1. nabadhara@gmail.com : Nabadhara : Nabadhara ADMIN
  2. bayzidnews@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  3. bayzid.bd255@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  4. mehadi.news@gmail.com : MEHADI HASAN : MEHADI HASAN
  5. jmitsolution24@gmail.com : support :
  6. mejbasupto@gmail.com : Mejba Rahman : Mejba Rahman
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন

রাজারহাটে ২০ হাজার গরুর চামড়া উঠলেও মন্দা, দ্বিতীয় হাটেও কমেছে বেচাকেনা

রুহুল আমিন, যশোর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫
  • ৭৩ জন নিউজটি পড়েছেন।

রুহুল আমিন, যশোর প্রতিনিধি

সুদিন ফেরেনি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চামড়ার মোকাম রাজারহাটে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, ঢাকার আড়তদার ও ট্যানারি সংশ্লিষ্টদের হাটে না আসা এবং নগদ টাকার সঙ্কটে বাজারে চামড়ার দাম নেই। ফলে লোকসানেই চামড়া বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের। শনিবার কোরবানি ঈদপরবর্তী সর্ববৃহৎ হাটে এই চিত্র উঠে এসেছে। এদিন প্রায় ২০ হাজার গরুর চামড়া আমদানি হলেও ক্রেতার সঙ্কটে হাটে মন্দাভাব বিরাজ করেছে।

 

ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের মূল্য নির্ধারণে মাঠ পর্যায়ে তারা বাড়তি দামে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাড়তি মূল্য দিচ্ছেন না। আর পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা বলছেন, ‘সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও সরকার তো চামড়া কেনে না। ট্যানারি মালিকরা যেভাবে দাম দেবে, সেভাবেই চামড়ার বেচাকেনা করতে হবে।’

 

রাজারহাট ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শনিবার (৭ জুন) কোরবানি ঈদ হওয়ায় গত মঙ্গলবার (১০ জুন) ছিল কোরবানি ঈদপরবর্তী প্রথম হাট। ওই দিন হাটে কিছু বেচাকেনা হলেও বড় হাট শনিবারের দিকে তাকিয়ে ছিলেন সবাই। এ কারণে শনিবারের (১৪ জুন) হাটে প্রায় ২০ হাজার গরুর চামড়া আমদানি হয়েছিল। সেই সাথে কয়েক হাজার ছাগলের চামড়াও আমদানি হয়েছিল। সবমিলিয়ে শনিবারের হাটে প্রায় দেড় কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনার খবর পাওয়া গেছে।

 

শনিবার রাজারহাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা স্থানীয় পরিবহণে করে চামড়া এনে স্তুপ করে রেখেছেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী হাজার হাজার চামড়া নিয়ে হাজির হতে থাকেন এই হাটে। হাটের মাঠ ছাড়িয়ে ব্যবসায়ীরা যশোর খুলনা মহাসড়কের পাশে চামড়ার স্তুপ নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। সবমিলিয়ে হাটে প্রায় ২০ হাজার গরুর চামড়া ও কয়েক হাজার ছাগলের চামড়া আমদানি হয়। কিন্তু হাটে চামড়া আমদানি ও বিক্রেতার তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কম। ফলে প্রতিযোগিতা না থাকায় বাড়েনি চামড়ার দাম।

 

তাদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় অনেক কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে কোরবানির পশুর চামড়া। মূলত ট্যানারি মালিক-আড়তদারদের সিন্ডিকেট এই চামড়ার দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। সিন্ডিকেটের কারণে তারা পূঁজি নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না।

 

আর স্থানীয় আড়তদার ও চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারের হাটে ঢাকা থেকে বড় ব্যবসায়ী, আড়তদার এবং ট্যানারি মালিকদের প্রতিনিধি রাজারহাটে আসেননি। ফলে বিক্রেতার তুলনায় ক্রেতা কম। এছাড়া দশদিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় সবার কাছেই নগদ টাকার সঙ্কট রয়েছে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি ঢাকার ব্যবসায়ী, ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা টাকা আদায় না হওয়ায়ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পুঁজি সঙ্কটে থাকায় বাজারে মন্দাভাব রয়েছে।

 

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি এলাকা থেকে ৩শ’ পিস গরুর চামড়া নিয়ে শনিবারের হাটে এসেছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পুলিন দাশ। তিনি জানালেন, সাড়ে ৭শ’ টাকা করে দেড়শ’ পিস চামড়া বিক্রি করেছেন। এই চামড়াই কেনা ও খরচ-খরচা মিলে হাজারের উপরে পড়েছে। আড়াইশ’ টাকা করে লোকসানে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। বাকী দেড়শ’ পিস চামড়ার দাম ৪শ’- ৫শ’র বেশি কেউ বলছে না। তিনি ৩শ’ পিস ছাগলের চামড়াও এনেছিলেন। সেগুলো ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, সরকার চামড়ার যে দাম দিয়েছে তাতে মাঠ থেকে তারা বেশি দামে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু এখন হাটে দাম মিলছে না। সরকারের দামে চামড়া কিনে তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

 

নড়াইলের লোহাগড়া থেকে রাজারহাটে চামড়া নিয়ে আসা শুভ বিশ্বাস জানালেন, তিনি ভাল মানের ১০২ পিস চামড়া নিয়ে এসেছেন। পাইকাররা দাম বলছেন এক হাজার টাকা করে। লবণ, শ্রমিক খরচ দিয়ে চামড়াগুলো এক হাজার টাকা পড়ে গেছে। তাই আরেকটু দামের আশায় আছেন, তাহলে পুঁজির সাথে পরিবহণ খরচটা উঠবে।

 

নড়াইলের লোহাগড়া থেকে রাজারহাটে এসেছিলেন পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান। তিনি রাজারহাট থেকে চামড়া কিনে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন। তিনি ৪শ’ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার ৭৫ টাকা পর্যন্ত দামে চামড়া কিনেছেন। তিনি হাজার খানেক চামড়া কিনেছেন। আরও কিছু চামড়া কিনবেন।

 

রাজারহাটের আরেক চামড়া ব্যবসায়ী খুরশীদ আলম বাবু জানালেন, সরকার দাম বাড়িয়ে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কিন্তু সরকার তো আর চামড়া কেনে না। চামড়া কেনে ট্যানারি মালিকরা। তাই তাদের সাথে কথা বলে দাম নির্ধারণ করেছে বলে মনে হয় না। ট্যানারি মালিকরা যে ধরণের দাম দিচ্ছে, হাটেও সেই দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সহসভাপতি সাঈদ আহমেদ নাসির শেফার্ড বলেন, মঙ্গলবার প্রথম ও ছোট হাট হওয়ায় এদিন ছয় হাজারের মতো গরুর চামড়া উঠেছিল। শনিবারের হাটে প্রায় ২০ হাজার গরুর চামড়া ও কিছু ছাগলের চামড়ার আমদানি হয়েছিল। কিন্তু দামে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। বেশির ভাগই চামড়াই ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। সবমিলিয়ে দেড় কোটি টাকার মত বেচাবিক্রি হতে পারে। তবে এতে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। মূলত সরকার নির্ধারিত দামের সাথে বাজারের সামঞ্জস্যতা নেই বলেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved সর্বস্বত্বঃ দেশ হাসান
Design & Developed By : JM IT SOLUTION