রুহুল আমিন, যশোর প্রতিনিধি
যশোরে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে। দিন যত যাচ্ছে করোনা আতঙ্কও শুরু হয়েছে। শুক্রবারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সাবিলা বেগম (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সাবিলা বেগম সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার গদখালী গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী ও যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মিনারা আলমের শাশুড়ি। এ নিয়ে গত ৩ দিনে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।’
এদিকে, করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২ হাজার কিট বরাদ্দ পেয়েছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখনো কিটের বরাদ্দ মেলেনি।
জানা গেছে, সাবিলা বেগম যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকায় ছেলের ভাড়াবাড়িতে বসবাস করতেন। গত ৫ জুন ঠান্ডা, কাশি ও জ্বর নিয়ে যশোরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। পরে ১২ জুন চিকিৎসক তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেফার্ড করেন। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ জুন বিকেল সাবিলা বেগমের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. রবিউল ইসলাম তুহিন জানান, আগে থেকেই রোগীর শ্বাসকষ্টসহ আরও কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল। করোনা সংক্রমণের পর তার জটিল আকার ধারণ করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। ডা. তুহিন আরও জানান, এর আগে বুধবার ভোরে বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর গ্রামের মৃত শেখ মখছেদ আলীর ছেলে আমির হোসেন (৬৮) ও রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের মাহমুদকাঠি গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে ইউসুফ আলী (৪৫) নামে দুই রোগী মারা যান।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, যশোরে করোনায় ৩ দিনে ৩ রোগীর মৃত্যুর ঘটনাটি এখন আতঙ্কের কারণ হয়েছে। এই অবস্থায় সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তিনি আরও জানান, হাসপাতালের জন্য ৫ হাজার কিটের চাহিদাপত্র মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছিল। বরাদ্দ মিলেছে মাত্র ২ হাজার পরীক্ষার কিট। বৃহস্পতিবার কিটগুলো হাসপাতালের পৌঁছেছে। কিটগুলো করোনা সন্দিগ্ধ ভর্তি রোগীদের র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষায় ব্যবহার করা হবে। কিটের পরিমান অল্প হওয়ায় বাইরের রোগীদের আপাতত পরীক্ষা সম্ভব হবে না।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা জানান, জেনারেল হাসপাতালে ২ হাজার কিট বরাদ্দ এসেছে। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এখনো কিট আসেনি। চলতি সপ্তাহে সেখানে কিটের বরাদ্দ মিলতে পারে। কিটের অভাবে এতদিন সরকারিভাবে করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছিল না। ২ হাজার কিট দিয়ে শনিবার থেকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।