বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি
বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে।বিষয়টি ২১জুন শনিবার জানাজানি হলে এনিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী লোকমান সিকদার গত ২১মে বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। তিনি উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের রফিক সিকদারের ছেলে ও বোয়ালিয়া বাজারের বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী।
মামলায় উল্লেখিত অভিযুক্তরা হলেন বাকেরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সাবেক ডিজিএম গোবিন্দ চন্দ্র দাস ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বরিশাল পোর্টরোড শাখার ক্যাশ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন ও ম্যানেজার মেজবা উদ্দিন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদি লোকমান সিকদারের বোয়ালিয়া বাজারে দেশ টেলিকম নামের একটি বিকাশ এজেন্টের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ব্যবসার পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি গ্রামের মানুষের বিদ্যুৎ বিল গ্রহণ করে বাকেরগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের নিজস্ব ভবনে অবস্থিত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের স্থাপিত বুথে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল জমা দিয়ে আসছিলেন। ওই ব্যাংক বুথের দায়িত্বে ছিলেন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন। বিগত ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি গ্রাহকদের প্রায় ৪০ লাখ ৩১৯ টাকা ওই ব্যাংক বুথে জমা দিয়ে রশিদ গ্রহণ করেছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে একাধিক গ্রাহক তার নিকট অভিযোগ করেন, পূর্বের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা সত্ত্বেও পুনরায় সেই বকেয়া বিল আসছে। গ্রাহকদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি জানতে তিনি ব্যাংকের বুথে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন ৪০ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ২৮ লাখ টাকা জমা হয়েছে।
পরবর্তীতে বিষয়টি তিনি তৎকালীন ডিজিএম গোবিন্দ চন্দ্র দাসকে জানান এবং তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগ করার কিছুদিন পর ডিজিএম গোবিন্দ চন্দ্র দাস তাকে জানায় এটা ব্যাংকের বিষয়। তিনি ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে আবেদন দিতে বলেন। এ বিষয়ে তিনি ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে ঈদুল আজহার আগে অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন তার সাথে আলোচনা করবেন বলে দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় ব্যাংক ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন ও পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম গোবিন্দ চন্দ্র দাস দুজনে মিলে উল্টো তাকে অবশিষ্ট টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। তাদের চাপে পড়ে লোকমান জমি-জমা বিক্রি করে প্রায় ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট টাকা পরিশোধ করা জন্য তিনি সময় চেয়ে অনুরোধ করলে এরই মধ্যে ডিজিএম গোবিন্দ চন্দ্র দাস অন্যত্র বদলি হয়। কিছুদিন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেনও চুপিসারে চট্টগ্রামে বদলি হয়ে যান। বন্ধ হয়ে যায় ব্যাংকের বুথটি।
বর্তমান ডিজিএম মাজাহারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি নতুন এসেছেন বলে জানিয়ে উপরোক্ত বিষয় কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন।
ভুক্তভোগী লোকমান সিকদার জানান, পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের ১৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগে তিনি গত ২১মে বরিশালের বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তৎকালীন ডিজিএমসহ দুই ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.