ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় আজ শুক্রবার এবং গত ২ দিনে অন্তত ১৫ জন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, আজ শুক্রবার উত্তর গাজার তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর একটি সাঁজোয়া যানকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরক রকেট ছোড়ে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেড। এতে ওই সাঁজোয়া যানে থাকা ১৭ জন ইসরায়েলি সেনার মধ্যে ৭ জন নিহত হন এবং আহত হন বাকি ১০ জন।
তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার গাজার প্রধান শহর গাজা সিটি এলাকায় আল কাসামের ব্রিগেডের গুলিতে নিহত হন এক ইসরায়েলি সেনা। এছাড়া এ সময় বিস্ফোরক রকেট ছুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর দু’টি মেরকাভা ট্যাংক, একটি সাঁজোয়া যান এবং একটি বুলডোজার ধ্বংস করা হয়।
তার আগের দিন বুধবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে আল কাসাম ব্রিগেডের গুলি ও রকেট হামলায় নিহত হন আরও ৭ জন ইসরায়েলি সেনা। নিহতদের মধ্যে একজন লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা ছিলেন।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুসারে, গত মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ফের ইসরায়েলি বানিহরি অভিযান শুরু হওয়ার পর এই প্রথম এত অল্প সময়ের ব্যবধানে গাজায় এত সংখ্যক ইসরায়েলি সেনা নিহত হলো।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেব অনুযায়ী গাজায় নিহত হয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬৫ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন।
টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল।
কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। সেই সঙ্গে গাজায় খাবার ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে গাজায়।
যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
এই যুদ্ধের শুরু থেকেই মধ্যস্থতার ভূমিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার এই তিন দেশ। কয়েক মাস আগে তেল আবিব এবং হামাস— উভয়পক্ষকে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিয়েছিল মধ্যস্থতাকারীরা, কিন্তু কোনো পক্ষই এ পর্যন্ত এ ইস্যুতে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.