পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জে বন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকেই নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে আলোচনায় এসেছেন খালেকুজ্জামান। পাহাড় ও বন ধ্বংসে লিপ্ত চক্রগুলোর বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্স নীতির ফলে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছে এসব অসাধু সিন্ডিকেট।
২০২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বারবাকিয়া রেঞ্জের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পাহাড় খেকো, গাছ চোর ও অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে পাঁচ মাসে তিনি ১৪টি মামলা করেছেন, বিপুল পরিমাণ গাছ ও অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু জব্দ করেছেন, সেলু মেশিন আটকসহ একাধিক যানবাহনও জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া গত ৩০ এপ্রিল চারটি অবৈধ বালু উত্তোলনকারী সেলু মেশিন জব্দের ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। যৌথ বাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত অভিযানে পাহাড় থেকে চোরাই গাছও উদ্ধার করেন তিনি। এ কারণে রোষানলে পড়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের। অপপ্রচার ও হুমকি-ধামকির শিকার হচ্ছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, বারবাকিয়ার টৈটং সংগ্রামের জুম এলাকার জহির ছড়া, তক্তার ছড়া, নাপিতার ছড়া ও বদির ঝিরি এলাকায় ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে সামাজিক বনায়নের আওতায় ৮০ হেক্টর জমি ৮০ জন উপকারভোগীর মাঝে বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে ২০১৭-১৮ সালে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ২০০ জনের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়, যার জেরে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগেই একটি সিন্ডিকেট ওই এলাকায় গাছ কেটে নেয়। এখন সেই গাছ কাটার দায় বর্তমান রেঞ্জ কর্মকর্তার ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জেড এম মুসলেম উদ্দিন বলেন, “এই গাছ কাটার ঘটনা বর্তমান সময়ের নয়, অনেক আগেই একটি প্রভাবশালী মহল তা কেটে নিয়েছে। বর্তমান রেঞ্জ কর্মকর্তা বরং দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।”
পরিবেশবাদীরাও একই সুরে বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকা সিন্ডিকেট বন ধ্বংস করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করেছে। বর্তমান কর্মকর্তা সেই চক্রকে মোকাবেলা করে পরিবেশ রক্ষায় সাহসী ভূমিকা রাখছেন।
এ বিষয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা খালেকুজ্জামান বলেন, “আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি। গাছ কাটার, পাহাড় কাটার মতো অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা আসলে সুবিধা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছে। আমি ভয় পাই না, যতদিন দায়িত্বে থাকি পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল ও পরিবেশপ্রেমীরা তার এমন সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, “বারবাকিয়ায় বন রক্ষায় খালেকুজ্জামান এখন এক সাহসী নাম।”