বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কারখানা নদী। খরস্রোতা কারখানা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে শিয়ালঘুনী গ্রামের শত শত বসত বাড়িঘরসহ হাট-বাজার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক পরিবার কৃষি জমিসহ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময় কারখানা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে কবাই ইউনিয়নের শিয়ালঘুনী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজন্ট কলেজের ভবন ও ৭০নং শিয়ালঘুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পরেছে নতুন করে গড়ে উঠা শিয়ালঘুনী গ্রামের ভেরি বাঁধসহ ভাঙ্গনের মুখে পড়া শতাধিক বাড়িঘর। যে কোন মুহূর্তে ভেরি বাঁধসহ এসব বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রতিবছর ভাঙ্গন কবলিত স্থানে নতুন করে ভেরিবাঁধ নির্মাণ করা হলেও বর্ষা মৌসুমে আবার নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকদের ফসল উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। যে কারনে ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের শত শত পরিবার। শিয়ালঘুনী গ্রামের ভাঙনের শিকার অনেক পরিবার শিয়ালঘুনি বাজারে, নদীর পাড়ে, রাস্তার পাশে কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
শিয়ালঘুনি গ্রানের বাসিন্দা শেফালী বেগম আমার দেশকে জানান, কারখানা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে চলাচলের সড়ক ও বসত বাড়িঘরসহ ফসলি জমি। সরকারিভাবে ভাঙ্গন রোধে কোন কার্যকরী ব্যাবস্থা নেই। অনেক পরিবার ভিটে মাটি হারিয়ে পথে বসেছেন। প্রতিবছর বেরিবাঁধ ভেঙে বর্ষা মৌসুমে লোকালয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। কৃষি কাজেও সমস্যা হচ্ছে। নদীর অব্যাহত ভাঙন রোধ করা না গেলে যে কোন মুহূর্তে শিয়ালঘুনী গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
কবাই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জহিরুল তালুকদার জানান, আমাদের পূর্ব পুরুষদের বাড়ি ঘর অনেক আগেই নদীতে হারিয়েছি। বাড়ির সামনে পারিবারিক কবরস্থান ছিল তাও নদীতে ভেঙে গেছে। নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা তিনি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানান।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী দ্রুত সময়ের মধ্যে কারখানা নদীর ভাঙ্গন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল জানান, কারখানা নদী ভাঙন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।