যশোর প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ, লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নরসুন্দর পিতা-পুত্রকে আটক ও ঢাকার খিলক্ষেতে দুর্গাপ্রতিমা অসম্মানের প্রতিবাদে যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে প্রায় ঘন্টাব্যাপি এই মানববন্ধন চলে। সংগঠনের জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অংশ নেন।
যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিপংকর দাস রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি দুলাল সমাদ্দার, সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রতন আচার্য, সদর উপজেলার সভাপতি রবিন কুমার পাল, বাঘারপাড়া উপজেলার সদস্য সচিব প্রণয় সরকার, যশোর পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক উৎপল সরকার, শার্শা উপজেলার সভাপতি নীল কুমার সিংহ, ঝিকরগাছার সভাপতি দুলাল অধিকারী ও মহিলা পরিষদের নেত্রী সুলতানা রহমান জলি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর শান্তি ফিরে আসার আশা থাকলেও বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর অন্যায়, অত্যাচার ও মন্দির ভাঙার ঘটনা বাড়ছে। এই দেশ থেকে আমাদেরকে বিতাড়িত করার চক্রান্ত চলছে। আমরা এই দেশে জন্মেছি এই দেশেই মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। ঢাকা খিলক্ষেতে সরকারের বুলডোজার দিয়ে মন্দির ও প্রতিমা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন ঘটনা বাংলাদেশে আগে কখনো ঘটেনি। আমাদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে কি? আমরা কার কাছে বিচার চাইব, সরকারের কাছে বিচার চেয়ে কোনো লাভ নাই। তিনি কুমিল্লায় বোনকে বিবস্ত্র করার ঘটনা এবং লালমনিরহাটে ১০ টাকার জন্য নরসুন্দর পিতা-পুত্রকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। যশোরের অভয়নগরের মসিহাটি গ্রামে হত্যাকাণ্ডের পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হয়, তাহলে সনাতনী সমাজ তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে যত বড় সাম্প্রদায়িক শক্তি আসুক না কেন, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্পর্ক নষ্ট করা যাবে না। ধর্মীয় মোড়কে একটি গোষ্ঠী পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা গঠন করার পায়তারা করছে, কিন্তু বাংলাদেশে এটা সম্ভব না। কে হিন্দু আর কে মুসলমান, তা দেখার বিষয় নয়, বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। বাঙালি জাতি অসাম্প্রদায়িক এবং এই জাতিকে কোনো সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। বাঙালি যতদিন আছে, ততদিন বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক থাকবে। খিলক্ষেতে মন্দির ভাঙার আগে সরকারের উচিত ছিল নোটিশ প্রদান করা। কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনায় স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ধর্ষকের বিচারের জোর দাবি জানান। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পূজা উদযাপন পরিষদ সার্বক্ষণিক রাজপথে থাকবে।