ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ধলহরাচন্দ্র-বরিয়া কাঁচা রাস্তার বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পাঁচ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই কাঁচা সড়কটি প্রতিদিন ব্যবহার করছেন সাধারণ মানুষ ও শত শত শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্ষা ও গ্রীষ্ম—দুই মৌসুমেই দুর্ভোগে ভুগছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ধলহরাচন্দ্র প্রাইমারি স্কুলের সামনে থেকে শুরু হয়ে হাঁটুভাঙা চরধলহরা হয়ে বরিয়া বালিকা বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোগ সড়ক। এটি ধলহরাচন্দ্র, চরধলহরা, বরিয়া, হাঁটুভাঙা ও আশপাশের গ্রামের মানুষের জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা। তবে রাস্তাটি বর্তমানে এতটাই নাজুক অবস্থায় রয়েছে যে, সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে থৈ থৈ করে উঠে।
চরধলহরা গ্রামের বাসিন্দা ফারুক বিশ্বাস জানান, “বর্ষার সময় হাঁটু সমান পানি জমে যায় রাস্তায়। তখন প্রায় চলাচলই বন্ধ হয়ে যায়। কৃষিপণ্য বাজারে নিতে না পেরে অনেক ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষকেরা। এমনকি, ২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দিতে হয় ঘোড়ার গাড়িকে।”
রশিদ মন্ডল বলেন, “রাস্তার বেহাল দশার কারণে বর্ষায় অসুস্থ রোগীদের সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া যায় না। অনেকেই বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছে না।”
অন্যদিকে, গ্রীষ্ম মৌসুমে ধুলাবালি, খানাখন্দ ও নোংরা আবর্জনায় পথচারীরা মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েন বলে জানান হাঁটুভাঙা গ্রামের রফিকুল ইসলাম। “প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। আমরা দ্রুত এই রাস্তাটি পাকা করার দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের প্যানেল চেয়ারম্যান বুলবুলি খাতুন বলেন, “রাস্তাটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এটি পাকা হলে পাঁচ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।”
এদিকে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল ইসলাম বলেন, “রাস্তাটি সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে ধলহরাচন্দ্র-বরিয়া সড়কটি পাকা করে চলাচলের উপযোগী করলে অবহেলিত এই অঞ্চলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন হবে।